(৬৬ বছর আগে খুব কষ্ট পেয়ে চলে গিয়েছিলেন জীবননান্দ দাশ)
মেয়েকে একটা চিঠি লিখছেন জীবনানন্দ দাশ
কুয়াশার স্রোতে ভেসে গেছে তাঁর দিনরাত-বারোমাস।
‘চাকরি হারিয়ে বুঝেছি জীবনে টাকা কত দরকার’;
অভাবে অভাবে ভেঙে গেল তাঁর ধুলোমাখা সংসার।
বালির ওপর জ্যোৎস্নার মতো প্রেম দূরে, বহুদূূরে –
কাজ খুঁজছেন তিনি সকলের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে।
শরীর ভালো না, প্রেসিডেন্সির এত পড়াশোনা নিয়ে,
কিছুই হয়নি, সবকিছু হয় শুধু সুপারিশ দিয়ে …
মেয়েকে একটা চিঠি লিখছেন, বাড়ি ভাড়া বাকি আছে,
‘সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে চাই নক্ষত্রের কাছে।’
এই শহরের বড় কবিদের ঈর্ষা কোথায় নামে?
তাঁর লেখা যেন চাপা পড়ে যায়, অনটন সংগ্রামে।
টাকার অভাব বদলে দিচ্ছে তাঁর মহাপৃথিবীকে,
অন্যের পাশে রোজই দ্যাখেন উচ্চাভিলাষী স্ত্রীকে।
তিনি কেউ নন এই পৃথিবীর, চাইছেন চলে যেতে,
যেভাবে রৌদ্র শুয়ে থাকে ওই ধানক্ষেতে মাথা পেতে।
মেয়েকে একটা চিঠি লিখছেন, অভাবে অভাবে ঢেকে,
খুব বেশি তিনি কখনো চাননি নিজের জীবন থেকে।
কিছুই পাননি, কুয়াশার দিকে চলে গিয়েছেন ধীরে,
পাখি হয়ে যদি ফিরতে পারেন ধানসিড়িটির তীরে।
মরণের আগে ইঁদুরের মুখে খুদকুড়ো লেগে থাকে,
অনেকেই খুব অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে তাঁকে।
হাঁটলে এখন যেন হাঁপ ধরে, শহরের রোদ্দুরে,
ইনসিওরেন্স পলিসি করান দরজায় ঘুরে ঘুরে।
কুয়াশার স্রোতে ভেসে যায় প্রেম, দিনরাত-বারোমাস,
মেয়েকে একটা চিঠি লিখছেন জীবনানন্দ দাশ।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.