জাহিদ মুস্তাফা
আনত কুসুমে ওমে প্রাণহরা মায়ার উজানে
চৈত্রসংক্রান্তির মেঘ
ডাকে – রুদ্র কালবৈশাখি দ্বৈরথে!
ঝড়ো হাওয়া ছুটে আয় –
যা উড়িয়ে নিয়ে যা জঞ্জাল
আশঙ্কার অতিমারি কোভিড-প্লাবন!
প্রাণভরে বাঁচার আকাক্সক্ষাগুলো
চারপাশে দোল খায় নববর্ষ সম্মিলনে ছায়ানটে রমনার বটমূলে মঙ্গল শোভাযাত্রায়
সাতজন্মভর দেখা কত চেনামুখ
চোখে চোখ রাখে কথা কয় স্মৃতিজাগানিয়া!
কচি তালপাতার বাঁশিতে
চিরপরিচিত মেঠোসুর
কত দূর থেকে ভেসে আসে প্রাণকাড়া বাউলসংগীত –
সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে!
সময়ের ডালপালা ডানা মেলে উড়ে যেতে যেতে
আহা সেই ছেলেবেলা আচমকা থমকে দাঁড়ায়
সংক্রান্তির মেলায় ভিড় ঠেলে
মনখারাপের আয়না ছাপিয়ে ফিরে দেখা
হালখাতা – পয়লা বৈশাখ!
জন্ম যদি তব বঙ্গে –
দাঁড়াও পথিকবর তিষ্ঠ ক্ষণকাল!
কপোতাক্ষ প্রাণ পেয়ে ধেয়ে আসে
ঊনবিংশতি শতকের ঢেউ
দত্তদের বাড়ির উঠানে!
অরিত্র ধরিত্রী ধুয়ে বিপুলা বিভুঁই
সামন্ত বাতাসে ওড়ে প্রাচীন প্রতাপ!
সেসবই তো শতবর্ষ মৌনতার ঘোরে
জলের নহর ভাঙে ঢাকের আওয়াজ –
কী গায় শচীনকর্তা প্রাণহরা স্বরে –
তাক্দুম তাক্দুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল!
মানুষ প্রাচীন হয় – বৃক্ষ হয়
গোত্র থেকে গোত্রে –
অবিন্যস্ত কিলবিলে শেকড় ছড়ায়
অন্তহীন মাটির গভীরে তুমুল সেঁধিয়ে যায়।
রবীন্দ্রনাথের মতো নবজন্মে –
হে নূতন দেখা দিক আরবার
সভ্যতার শতায়ু গৌরব!
যাঁরা চলে গেছে দূরে – গন্ধর্ব নগরে
সেখানেও শেকড়ের মায়াবী বিস্তার!
বৈশাখের রঙে-ঢঙে আহারে বিহারে
মৃত্যুকে ছাপিয়ে এসো পথ হাঁটি
জীবনানন্দে হাজার বছর!
রুদ্র কালবৈশাখি দ্বৈরথে
ঝড়ো হাওয়া ছুটে আয় –
যা উড়িয়ে নিয়ে যা জঞ্জাল!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.