কুয়াশা-কবুতর

গোধূলিঘেরা গ্রহের গন্তব্যে বয়ে গেছে

তোমার নিশ্বাসের রূপরাস্তা

আঁধার টলমল, তারা-টইটম্বুর।

উৎসবের দিন, গন্ধ ম-ম

হাঁড়িতে হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে কান্না

সন্ত্রাসের অভিমুখে শতশত শান্তি-হামলা

তবু কথা মানেই কাঁটা

সাইলেন্স সাইলেন্স, গোল্ডেন সাইলেন্স

ওই তো শাড়িপল্লি,

জনমভর বুনে চলি প্রয়াণের জামদানি।

মোগল-ময়ূরের কেকায় ভেসে যাচ্ছি

আজকের আমি-তুমি ধ্বংসের রাজতোরণ স্বাগত করছে

সাবধান হুঁশিয়ার, সব চুপচাপ;

নয়তো বেঘোরে কাটা যাবে শব্দের শির

আপাতত বাঁধি ঘাসফুলের বেণি

ঋণের রোদ মূলত মেঘলা ইন্দ্রকুঠি

আলোহাওয়া আরো কিছু ঋণ করে

কোনোমতে এই শ্বাসটাকে জারি রাখি।

হৃদয়ের নাকাড়া কোথায় ফেলে এসেছি

তোমার তনুর তরু; তার ডালে বসা

ফড়িং-ফকির আমি

ভিখিরি-বাসনা নিয়েই কতকাল বাদশাহি!

কুয়াশার ক্রিং ক্রিং হেমন্ত তোমার তরঙ্গ ফুরোলে

শীত একটা সাইকেল; স্মৃতির চক্রযান

ফিরে যাচ্ছে ফিরে আসছে ফেলে আসা আমিটি

চিরস্থায়ী বিষের বন্দোবস্ত

মধুর তুমি শেষ হয়ে আসো

মধুরিমা, তুমিও।

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ী

এত এত গতি ও গন্তব্যগুচ্ছ

জলসাঘরে চুরমার বেলোয়ারি ঝাড়

অন্ধকারের শিল্পরীতি, মায়াময় বিভঙ্গ মুরতি।

অন্ধ আরাধনার ভেতর চোখ-চক্কর

নাজুক নদীতে বহতা আগুনের উপকথা

গাছে গাছে ফলের রোদে, ফুল-ভাজা খেয়ে

ক্ষুধার শিল্পকলা শানিত করি

পুড়ে যাওয়া পাঠপৃথিবী

কত মনিকা আলী, ঝুম্পা লাহিড়ী

আখ্যানের ছাই থেকে

কিছু আমি মাছ হয়ে আত্মার অ্যাকোরিয়ামে, 

অতলান্ত আহার বিহার

অসীম ভিতর এই সিমার-শহর

কুরুক্ষেত্র-কারবালা; জলদগ্ধ পানিপথে

আমাকে আর কতদূর হাঁটতে হবে!