শীতপত্র

এ শীত আছড়ে পড়ে

অরণ্যের গানে –

জঙ্গলের ডালপালা চিরে

হাওয়া শীতল প্রাণে!

এ শীত ছিটকে পড়ে

হিম জলযানে –

ভোরের নৈঃশব্দ্য ফুঁড়ে

কুয়াশার ক্যারাভানে!

শীতের গহিন ঘ্রাণে

পরিযায়ী হিমেল ডানায় –

আমি ছুটে যাই

জঙ্গলের সবুজ মাচানে

জেগে ওঠা দূরের ভাসানে –

কুয়াশা মোড়ানো কোনো

নিঝুম জংশনে!

এ শীতে মুদ্রিত হয়

ফেলে দেয়া পুরনো বিষাদ –

তুমি কি আসবে আজ

জড়ানো চাদর গায়ে –

মুছে দিতে কান্না অবসাদ?

তুমি চুল খুলছ বলে

মোস্তফা তারিকুল আহসান

তুমি চুল খুলে বসে আছ বারান্দায়

তোমাকে দেখছে ছদ্মবেশী আকাশ

তোমাকে দেখছে ক্ষুধার্ত কুকুর

তুমি আলোয়ান তুললে রৌদ্র মুছে নিচ্ছে ঘাম

তুমি চোখ তুললে প্রজাপতি পাখা মেলছে

বিশীর্ণ একঝাঁক কাক সারাদিন খাবার না পেয়ে

বিদ্যুতের খুঁটিতে মিছিল করছে

ডান পা টিপে টিপে পালাচ্ছে কিশোর পকেটমার

আজীবন  মিথ্যে বলা মানুষটা কুকুরদুটোকে বিস্কুট

                             খেতে অনুরোধ করছে

তুমি চুল খুলছ বলে সংসদে বিল পাশ হলো

দ্রুত বিচার হবে নারী সহিংসতার

বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে চারা ধানগাছে সকালের রোদে

খুনসুটি করছে চারটে কাকাতুয়া

লেজ নাড়িয়ে পাড়া বেড়াতে গেল কাঠবেড়ালি

রগড় থামিয়ে এক যুবক বাবার সাথে খালি পায়ে

                                বাজারে গেল

আমরা বাড়িতে বানানো চানাচুর খেয়ে বহুদিন পর

                               ঢেকুর তুললাম

বহুদিন পর চিনেবাদামের স্বাদ পাচ্ছি

বহুকাল পর একজন নেতা সত্য কথা বলল

আমরা নারদ নদী করে কালিগ্রাম যাচ্ছি

ধানসিড়ি নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে

ইলিশের স্বাদ ফিরে আসছে কৃষকের মুখে

মানুষ পথে পথে লালনের গান করছে আবার

মাজার উজিয়ে আমরা মানুষের খোঁজে বেরিয়ে পড়ছি

মন খারাপ করা কিশোরী আবার ফুটবল খেলছে

তুমি চুল খুলে খোলা বারান্দায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাক