গালির ভাষায় গলাগলি

কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, তিনি মানুষের গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করতে চান। তা ঠিক আছে। কিন্তু বাংলা শব্দ গালাগালি থেকে এসেছে গালি-শব্দ রূপছোট হয়ে। গালি আর গালাগালের আভিধানিক অর্থ এক নয় কিন্তু। গালাগাল অর্থ ভর্ৎসনা। এটির মাত্রা বেশ লঘু। গালি কিন্তু ভর্ৎসনার চেয়ে অনেক বেশি তীব্র! কখনো এটি হয়ে ওঠে আক্রমণের ভাষাও। তাই বাংলা ভাষায় গালি পৃথক মাত্রা বহন করে নিশ্চয়। এক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা আছে। এর সারাংশটি কিন্তু প্রায় একই।

যখন লেখাটি লিখছি, তখন ঢবঢবির মায়ের কথা খুব মনে পড়েছে। শুধু ঢবঢবির মা নয়, মনে পড়ছে তার পুত্র-কন্যাদের কথাও। সেই ছফর, টাকি, সুকুমার, তুরুলি, ঢবঢবি-আরো কেউ কেউ। আমার একেবারে শৈশবের দিনগুলোতে পরিচিত পরিবারগুলোর মধ্যে এই একটি পরিবারই ছিল ব্যতিক্রম। অর্থনৈতিক টানাপড়েনে তো বটেই, কথাবার্তা, চালচলন, এমনকি নামের দিক থেকেও। আজ তাদের উত্তরপ্রজন্ম লেখাপড়া শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; কিন্তু সেদিন ওরা আবাস গড়েছিল দেবোত্তর সম্পত্তির এক কোণে, পাশেই ছিল রঘুনাথ মন্দির আর তার সামনে মাঠ। এই পরিবারটির সঙ্গে আমাদের, অর্থাৎ স্কুলপড়ুয়া কিছু কথিত ভদ্রলোকের সন্তান বলে পরিচিতদের পরিচয় ঘটে মাঠে খেলতে যাওয়ার সময়। ওদের ছেলেমেয়েগুলোর স্কুলে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেউ কেউ গেলেও প্রাথমিক-পর্ব পাশ কারো ভাগ্যেই জোটেনি আর্থিক কারণে। তাই স্কুলে ওদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার সুযোগ ছিল না। মা-বাবা আমাকে নিষেধ করতেন ওদের সঙ্গে মিশতে, আমার খেলার অন্য বন্ধুদের মা-বাবাও একই নিষেধ করতেন তাঁদের সন্তানদের। এই নিষেধের নানা কারণের একটি হলো, সাবলীলভাবে ওদের কণ্ঠ থেকে নিঃসৃত গালি শিখবার ভয়। আমরা যাকে গালি ভাবতাম, ওরাও তাকে গালি ভাবত বটে; কিন্তু সেগুলো ওরা এতটা অনায়াসে ব্যবহার করত, মনে হতো ওই পরিবারের মানুষগুলোর জন্য সেগুলো যেন সাধারণ বুলি। ছফর আমাদের চেয়ে বয়সে বেশ বড়, টাকি বড় বছরতিনেকের, সুকুমার বছরখানেকের। আমরা স্কুলপড়ুয়া প্রতিবেশী বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে ফুটবল কিনে বিকেলে মাঠে যখন সেটা নিয়ে যেতাম, তখনপ্রতিদিন ইসু কুমার ঘুরঘুর করতে থাকত। ওকে খেলায় নেব না-এই আমাদের প্রতিজ্ঞা! খেলায় নিলে মা-বাবার বকুনি শুনতে হবে। আমাদের এই প্রতিজ্ঞাটি প্রায়ই ভাঙতে হতো। কারণ আমাদের খেলোয়াড়-বন্ধুদের নির্দিষ্ট সময়েনা-আসা, আবার কারো না কারোর প্রায়ই অনুপস্থিত থাকা। তাই ‘ফিলার’ হিসেবে সুকুমারের জায়গাটা আমাদের মধ্যে হয়েই গিয়েছিল। মনে পড়ে, গালি শ্রবণের পাঠটা আমরা অনেকে সুকুমারের কাছ থেকেই প্রথম নিয়েছিলাম। আমি আজো ভাবি সেই সুকুমারের কথা, যার মুখে শোনা একটি গালিতে প্রথম অনুমান করে বুঝেছিলাম নারীর সন্তান জন্মদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে। গালিতে অনর্গল সেই সুকুমার চোট পেলে বা অসন্তুষ্ট হয়ে স্বভাবসুলভভাবে গালাগাল করতে থাকত আর পুত্রের কণ্ঠ শুনেই ঘর থেকে বের হয়ে আসত ওর মা। আমাদের পুরো দলের বিরুদ্ধে ওর মায়ের যে রুদ্র-ভৈরবী মূর্তি এবং আরেক প্রস্থ গালাগালের খই-ফোটানো অবস্থা-আমাদের গালিশেখার পাঠটি পোক্ত হয়েছিল সে-সময়। ওর মায়ের ভয়েই সুকুমারকে একবার খেলায় নেওয়ার পর আর বাদ দেওয়ার চিন্তা আমরা করতাম না। আজ বুঝি, সেই গালি কতবড় অস্ত্র ছিল তাদের; যে-অস্ত্রের ভয়ে আমরা সুকুমারকে খেলায় একবার নিয়ে ফেললে আর বাদ দিতে সাহস পেতাম না। অথচ, ফুটবল কেনার চাঁদা সে কোনো দিন দেয়নি অথবা টাকা দেওয়ার আর্থিক সামর্থ্য তার ছিল না!

গালি তাহলে সমাজজীবনে বেঁচে থাকার হাতিয়ার কারো কাছে? মনে পড়ে, দাদুবাড়ির মালিনী সুখা আর তার পরিবারের সদস্যদের কথা। আমার দাদুবাড়ির পাশে তাঁদের জমিতে ঘরবেঁধে বাস করত চার-পাঁচটি অন্ত্যজ পরিবার। তারা মূলত দাদুবাড়িতে গৃহস্থালি নানা কর্মে নিয়োজিত ছিল। এদের গালিময় ঝগড়া শোনার সুযোগ আমার হয়েছে। সেই ঝগড়ায় ব্যবহৃত অনেক গালির অর্থ সেদিন বুঝতাম না, কিছু আজো বুঝি না। তবে এই গালি যে তাদের বেঁচে থাকার হাতিয়ার ছিল, তাদের নবযৌবন সমাগতা কন্যাটি কে বখাটে ছোড়াদের হাত থেকে রক্ষার অস্ত্র ছিল, তা ঠিক অনুমান করি। আমি দাদুবাড়িতে আত্মরক্ষার বৈধ অস্ত্র দেখেছি। এই অন্ত্যজ মানুষগুলোর কাছে বল্লম, তলোয়ার ছিল না-ছিল গালি, সে-গালি দিয়ে তারা রক্ষা করেছে নিজেদের; কখনো খেলায় স্থান করে নিয়েছে, কখনো কন্যাকে অন্যের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচিয়েছে।

কথিত ভদ্রলোকের মুখেও কি গালির নহর প্রবাহিত হয় না? তাঁদের মুখে গালি কেন? প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের এক প্রাক্তন সদস্যের গালির অর্থ আমি সেদিন ঠিক বুঝতে পেরেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে প্রবেশ করতে গিয়ে হঠাৎ করেই তাঁর প্রাইভেটকারটি দাঁড়িয়ে থাকা একটি রিকশার স্পর্শ লেগে আঁচড়প্রাপ্ত হয়। ড্রাইভিং সিট থেকে দ্রুত নেমে আসেন পিএসসির সেইপ্রাক্তন বিজ্ঞ সদস্য (পিএসসির সদস্যদের ‘বিজ্ঞ সদস্য’ বলা হয়), পাশের আসন থেকে তাঁর স্ত্রীও নামেন। আঁচড়প্রাপ্ত গাড়ি দেখে প্রায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রীর অস্তিত্ব ভুলে, আমরা কয়েকজন মানুষও যে দাঁড়িয়ে ছিলাম কাছাকাছি, সেদিকে খেয়াল না করে, রিকশা চালককে পিএসসির সেই প্রাক্তন বিজ্ঞ সদস্য অজ্ঞের মতো উচ্চৈঃস্বরে গালাগাল করলেন। আসামির মতো দাঁড়িয়ে রইল রিকশাচালক। নিজের অপরাধ নেই, এটা জেনেও প্রতিবাদ করল না সে। হয়তো মনে মনে প্রতিবাদের ইচ্ছে পোষণ করেছিল-প্রকাশ করেনি সে-প্রতিবাদ। সেদিন একপক্ষীয় গালি শুনেছিলাম দাঁড়িয়ে। আমার কাছে মনে হচ্ছিল, পিএসসির সেই প্রাক্তন বিজ্ঞ সদস্যের ভেতর থেকে আর একজন মানুষ বের হয়ে এসে উচ্চৈঃস্বরে গালি দিচ্ছে, যার সঙ্গে সুখার বাড়ির যে-কারো গালি মিলে যায় অথবা সুকুমারের কণ্ঠও যেন শুনতে পাওয়া যায়-যদিও পিএসসির সেই প্রাক্তন বিজ্ঞ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক! তাহলে অন্ত্যজ বা অশিক্ষিতরাই গালি ব্যবহার করে- এ-কথা কি সত্য নয়? আমাদের শৈশবে আমাদের মা-বাবা যে-ভয় পেয়েছিলেন-অন্ত্যজশ্রেণির ছেলেদের সঙ্গে মিশলে আমরাও গালাগাল শিখে ফেলব-তার ভিত্তি কম? হয়তো তাই। শিক্ষিত হলেই গালি শিখবে না বা গালি দেবে না-এমন কথা নেই। অনেক শিক্ষিতই গালি ব্যবহার করেন, যেমনটি করেছেন পিএসসির সেই প্রাক্তন ‘বিজ্ঞ’ সদস্য। বোঝা যায়, তিনি ‘বিজ্ঞ’ সদস্য থাকলেও সাংস্কৃতিক শিক্ষাটি তাঁর খুবই দুর্বল। তাই গাড়িতে সামান্য আঁচড়েই তাঁর শিক্ষার মুখোশটি খসে পড়ে এবং তিনি আরেকজন সুখা বাসুকুমারে পরিণত হন। এই সাংস্কৃতিক শিক্ষাটিই জরুরি।

সংস্কৃতির জন্যই গালি কখনো বুলি হয়ে ওঠে। এখন যদি লিখি : ‘শালার সাহিত্য’ –এটি কি দোষের? বাঙালি সমাজে শ্যালক অর্থে ‘শালা’ শব্দটি বলা বা লেখার কারণে কখনো তা গালির পর্যায়ভুক্ত হয়। কিন্তু ঢাকার আদি বাসিন্দারা ‘শালা’ শব্দের নির্দোষ প্রয়োগ করে থাকেন সংস্কৃতির কারণেই। ঢাকাইয়া কুট্টি ও সুব্বাসিদের ভাষায় শালা>হালা শব্দটির নির্দোষ প্রয়োগ বাঙালিদের কাছে বেশ উপভোগ্য বটে। তাই, বাবা, মা, শিক্ষক, গাছ, গরু, ছাগল সর্বত্র তারা নির্দোষভাবে শালা>হালা, শালায়>হালায় শব্দ ব্যবহার করেন। যেমন : ‘আইজকাছার (স্যার) হালায় আমারে খুব আদর করছে।’ ‘গারি (গাড়ি) থুইয়া গরু বি হালায় দৌর (দৌড়) মারছে।’ ‘হালার ছাহিত্যের মইধ্যে তুই কি পাইছস?’ গালির ‘সম্পূর্ণ’ নির্দোষ প্রয়োগ বাঙালিদের মধ্যে কমই আছে-তবে ‘প্রায়’ নির্দোষ প্রয়োগ দেখা যায়। যেমন : দীনবন্ধু মিত্রের নীল-দর্পণ নাটকে তোরাপ বলেছে : ‘দুত্তোর, প্যারেকের মার প্যাট করে‌্য …।’ পেরেক নামক জড় বস্তুর মা কল্পনা করে তার সঙ্গে সঙ্গমের প্রসঙ্গটি ‘প্রায়’ নির্দোষ হিসেবেই বিবেচ্য। আমাদের দেশের অপরাধজগতে এরকমের ‘প্রায় নির্দোষ’ গালি প্রচলিত আছে। বাংলা সাহিত্যে এই নির্দোষ গালির ব্যবহার আছে। উপস্থাপনাকে বিশ্বাস ঘন করে তোলার জন্য উইলিয়াম কেরি তাঁর কথোপকথন গ্রন্থে যে-গালিমিশ্রিত গদ্য উপস্থাপন করেছেন তা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। এই গ্রন্থে ‘মাইয়াকন্দল’ অর্থাৎ নারীদের ঝগড়া নামে একটি অংশ আছে। সেখানে উইলিয়াম কেরি উদ্ধৃত করেছেন :

-তুমি কোথা গিয়াছিলা পাড়াবেড়ানীর সাঁজের কাযকাম কিছু মনে নাই বটে।

-কি কাযের দায় তুই ঠেকিয়াছিস যে এত কথা তোরলো।

-আমি কাজে ঠেকি নাই, তুই সকল কাযে ঠেকিয়াছিস।

-তুই আমার কি কাযে ঠেকিয়া এত কথা কইসলো।

-চক্ষু খাকী তোর চক্ষের মাথা খাইয়া দেখিতে পাইস না এ সকল কায কে করিয়াছে।

-তোর যে বড় ঠেকারা হইয়াছে একদিন কায করিয়া এত কইস।

-পুতখাকী তুই আমার কি জানিস। তোর মত পাড়া- মরদের কাছে আমি যাই না।

-গস্তানী। তুই যেমন উহাকে ভাই বলিস, রাত্রে তাহারে লইয়া থাকিস। সেমত আমরা নই।

-আরে পেটফেলানি খানকি। আমি কারে লইয়া

থাকি। তুই কারে দেখিয়াছিস রে।

-তোর যে বড় গলারে ভাইখাকী। আজি তোর অহঙ্কার ভাঙ্গিতে হবেক। তাহা নহিলে তুই নিরস্ত হবি না।

-আজি তুই আমারে নিরস্ত না করিয়া যদি ভাত খাইস তবে তোর পুতের মাথা খাইস।

-শুনিতে পাও তোমরা গো রাক্ষসী খানকির কথা, এমত রাক্ষসীর মুখে আগুন দেওয়া উচিত।

‘মাইয়াকন্দল’ পর্বটি বেশ দীর্ঘ। নানা ধরনের গালির উল্লেখ আছে এতে। উদ্ধৃতিতে উল্লেখকৃত গালিগুলো ছাড়াও ‘বজ্জাত’, ‘ভাতারী’, ‘ভালখাকী’, ‘ঝাঁটামারা’ ইত্যাদি গালির সাবলীল ব্যবহার এই অংশে দেখা যায়। অর্থাৎ গালি বাস্তব জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবেই সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে। ইংরেজদের মুখ থেকেও বাংলাসাহিত্যে গালির উদাহরণ পাওয়া যাবে। আবার স্মরণ করি দীনবন্ধু মিত্রের নীল-দর্পণ নাটকের কথা। সেখানে রোগসাহেব একাধিক স্থানে ইংরেজি গালি ব্যবহার করেছে, বাংলা গালিও দু-একটা দিয়েছে। উদাহরণ দেওয়া যাক :

ক. তুই ঘর হইতে যা, আমার শক্তি থাকে আমি নরম করবো, নচেৎ তোর সঙ্গে বাড়ী পাঠাইয়া দিব-ড্যামন্ডেহোর, আমার বোধ হইতেছে তুই বাধা করেছিলে, … …।

খ. ইন্ফরন্যালবিচ্! এইবার তোমার ছেনালি ভঙ্গ হইবে।

রোগসাহেব Damned whore অর্থাৎ পশুরমতোবেশ্যা এবং Infernal bitch অর্থাৎ নরকের কুকুরি এই গালি দুটোর সঙ্গে বাংলা গালি ‘ছেনাল’ ভালোই রপ্ত করেছে। এ-নাটকে ইংরেজদের মুখে গালাগালি বেশ শোনা যায়। শোনা যাবেই-বা না কেন-তারাও তো বাঙালিদের মতোই মানুষ। গালির প্রশ্নে সবাইকে মূল্যায়ন বোধকরি করা চলে সংস্কৃতি বা Culture দিয়েই; এক্ষেত্রে বাঙালি বা অবাঙালির পার্থক্য নেই। আসলে এই পার্থক্য নির্ণীত হবে সংস্কৃতিমানতার তারতম্যে। পরবর্তীকালের বাংলাসাহিত্যে, এমনকি জীবনবাদী বা অন্ত্যজশ্রেণির সাহিত্য বলে দাবিকৃত সাহিত্যেও গালির উল্লেখ যে ঠিক আগের মতো (কথোপকথনবানীল-দর্পণ) আর বিশ্বাসঘন ভাবে পাওয়া যায় না, তার কারণ কী? তবে কি আমাদের সমাজ থেকে গালি উঠে গেছে? উঠে যে যায়নি আমার উল্লেখকৃত পিএসসির প্রাক্তন ‘বিজ্ঞ’ সদস্যের ব্যবহারই তার প্রমাণ! তাহলে সাহিত্যে এতরাখ ঢাক কেন; তথাকথিত জীবনবাদী বা গণমানুষের সাহিত্যই বা কেন এত ‘পলিশ’ করা? এসব দেখে পুরনো ঢাকার বাসিন্দাদের মতো বাঙালি উচ্চারণে বলব কিনা : ‘শালার সাহিত্য’!!