আমার বাবা নেই। চলে গেছেন। এক সময়
তিনি কলকাতায় থাকতেন। পড়াশুনা করতেন
ইসলামিয়া কলেজে। সাদা ফিনফিনে ধুতি পরতেন
বাবা। আর বিকেলের দিকে হেঁটে হেঁটে গঙ্গার ধারে
যেতেন। মানুষের স্নান দেখতেন – পুণ্যপ্রার্থী মানুষের
পাপ কীভাবে ধুয়ে দিতে পারে গঙ্গার ঘোলা জল
সেই দৃশ্য দেখতেন অপার বিস্ময়ে! কখনো কখনো
জ্যোৎস্নামুখর রাতে গড়ের মাঠে বন্ধুদের সাথে
শুয়ে শুয়ে আকাশ নক্ষত্র দেখতেন। বাবা বলতেন,
সেসময় একটা পিসফুল কো-একজিস্টেন্স ছিল
মানুষ ও প্রকৃতির। কলকাতায় বাবার কোনো
অসুবিধা হয়নি কোনোদিন।
সেই আকাশ নক্ষত্র, সেই গড়ের মাঠ, সেই হাওড়া ব্রিজ
আর সেই গঙ্গার ধার – সবই আছে, শুধু বাবা নেই।
তবে তাঁর ধুতিপরা ছবিটি আমাদের দেয়ালে আছে আজো।
যদিও কাচের সঙ্গে লেপ্টে ছবিটির নিচের দিকটা একটা
পলেস্তারা খসা দেয়ালের প্রতিচিত্র হয়ে উঠেছে, এখন
ছবিটির দিকে তাকালে মনে হয়, মনে হয় –
বাবা সেই ধূসর দেয়ালের ওপর থেকে উঁকি দিয়ে
আমাদের দেখছেন আজো।
টরন্টো, কানাডা
নভেম্বর ১৮/২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.