বিব্রত সংলাপ

তুমি বারবার নতুন কিছু শুনতে চাইলে

বোল্লে : ‘আমাকে নতুন কিছু শোনাও’

আমি বোল্লাম : ‘অমাবস্যার পুঞ্জপুঞ্জ অন্ধকার

একদল কালো মুখোশ-পরা

ডাকাতের মতো

শিকার করতে চাইছে শাদা খরগোশের মতো কম্পমান

চাঁদটাকে’

তুমি বোল্লে : ‘এর কোনো অর্থ নেই!’

আমি আবার বোল্লাম : ‘তুমি কী শোনোনি

তিনটে মাছের আক্রমণে নিহত মাছরাঙা প’ড়ে আছে নদীর

ওপারে’

তোমার চোখের তারা

অবিশ্বাসে বারবার নেচে উঠলো : ‘এটা একটা

প্রকৃতি-বিরুদ্ধ ঘটনা, হ’তেই পারে না’

আমি এবার একটু উঁচু গলায় : ‘বিশ্বাস করো অরণ্যের অব্যাহত

আক্রমণে দারুণ সংকুচিত হয়ে পড়ছে

আমাদের শহরগুলো।’

ম্লান হেসে তুমি বোল্লে : ‘ব্যাপারটা বরং উলটো

মানুষের হন্তারক হাতের কল্যাণে এ-দেশে

পুষ্পল ঋতু আর দেখাই যায় না’

আমি এবার রেগে উঠলাম : ‘তুমি জানো

সমুদ্র প্রত্যাখ্যান করেছে আমাদের নদীগুলোকে,

তারা ফিরে আসছে তাতার দস্যুর তরঙ্গের মতো

আমাদের গ্রাম ও শহরের দিকে।’

হেলায়-ফেলায় তুমি বোল্লে : ‘অমন অলক্ষুণে কথা

শুনতেও নেই!’

আমি আবার বোল্লাম : ‘ঐ দ্যাখো হরিণশাবকের তাড়া খেয়ে

দিশেহারা ডোরাকাটা বাঘগুলো

দিগ্বিদিক

পালাচ্ছে ছুটে।’

তুমি মø­ান হেসে বোল্লে : ‘এমন সুদিন কখনো কি আসবে?’

বস্টন, ১৯৯০