হওয়া না-হওয়ার গান

শুভাশিস সিনহা
জনম : ২৯ জানুয়ারি ১৯৭৮
পেশা : নাট্য প্রশিক্ষক
প্রকাশক : দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লি.

যথার্থ কবি প্রতিভার প্রতিশ্রম্নতি নিয়ে শুভাশিস সিনহা রচনা করেছেন হওয়া না-হওয়ার গান কাব্যগ্রন্থ। কবিতার প্রধান গুণ যে ব্যঞ্জনাধর্মী ও শব্দছন্দ নিরীক্ষা তা এই কাব্যে রয়েছে। বিষয়ভাবনার ক্ষেত্রে হয়তো তিনি চিরাচরিত প্রেম ও প্রকৃতিকেই বেছে নিয়েছেন। কিন্তু ভাবনাটি রূপায়ণের ক্ষেত্রে তা আর চিরাচরিত থাকেনি, চেতনার ও বলার ভঙ্গির জন্য তা হয়ে উঠেছে আলাদা ব্যঞ্জনা সৃষ্টিকারী। আবহমান আকাশ, নদী, রোদ, ঋতুপরিক্রমায় তিনি অমত্মর্বয়ন করেন প্রকৃতির চাঞ্চল্য ও স্থিরতা, প্রেমের ঐতিহ্য ও বর্তমানতা। শব্দ তৈরিতে এই কবির মনোযোগ সবচেয়ে বেশি; নতুন-নতুন শব্দ যেমন গঠন করেছেন, তেমনি পুরনো শব্দকেও অনায়াসে ব্যবহার করেছেন।

হওয়া না-হওয়ার গান - শুভাশিস সিনহা
হওয়া না-হওয়ার গান – শুভাশিস সিনহা

এ-সূত্রে তাঁর কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের কণ্ঠস্বর অনুরণিত। আশা ও নিরাশার সঙ্গে এক অনিশ্চয়তাবোধের তাড়না আছে তাঁর নির্মিত ভুবনে। এই বোধ জীবনপ্রবাহেরই অনুষঙ্গী। ছন্দ নিয়ে শুভাশিস সিনহা নিরীক্ষাপ্রবণ। টানা গদ্যে ছন্দায়িত করেন ভাবনাকে। তিনি গদ্যছন্দে মুক্তক প্রবহমানতাও সঞ্চার করেন। এটি তাঁর শক্তির পরিচায়ক। সত্মবক রচনায়ও এই কবি পারদর্শী। হওয়া না-হওয়ার গান লিরিক সুরে সহজ কাব্যগুণে ভরা। গ্রন্থের নামে দ্ব্যর্থক ব্যঞ্জনা হওয়া বা না-হওয়ার কথা বলে তিনি স্থির ও গতির যেমন দ্বিরাবর্ত সৃষ্টি করেছেন, তেমনি করেছেন জীবনের সম্ভাবনাকেও চিহ্নিত। বাংলা কবিতার চলমান গতিধারায় তাঁর স্থান নিঃসন্দেহে স্বতন্ত্র ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রম্নতিবহ।