অনিকেত সুর

  • মাতৃবেদনা

    দুঃখভারাবনতা মাকে বহুদিন দেখেছি             একা একা ঘরের ভিতর মুখ নত, বিশীর্ণ দু-গালে বহমান উচ্ছ্রিত নোনাধারা – সেই নীরব নত অশ্রুপাতে আমাদের ছোটঘরে কথাহীন জড়ো হতো পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘের পাথর বিমূঢ় প্রশ্ন করি শিশু কৌতূহলে,                                ‘কী হইছে মা?’ ‘বুঝবি না তুই, বাবা’, বলতে বলতে আঁচলে চোখ মুছে মা সরে যেতেন অন্যদিকে … আমার প্রাত্যহিক…

  • চুম্বন ও শস্যদানা

    (উৎসর্গ : অকালপ্রয়াত এক বন্ধুর উদ্দেশে) টিএসসি সড়কদ্বীপ থেকে কথারা উড়ত হাওয়ায় আর আমাদের বৈকালিক ক্লাসে নানান খণ্ডদৃশ্য মুহুর্মুহু নেমে আসত বহুতর ধ্বনিসঙ্গে আমরা দেখতাম, বৃষ্টি নামছে শস্যদানার মতো ওদের কুড়িয়ে নিয়ে শূন্য পকেট ভ’রে আমরা ফিরতাম যে যার বাড়ি। তুই বলতিস, কবিতার জন্য কিছু অপেক্ষা লাগে যেমন ফসলের জন্য আমরা অপেক্ষা করি বৃষ্টির বলতিস, অপেক্ষা…

  • অটোফ্যাজি

    (ইয়োশিনোরি ওশামির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে) ধানের মরশুম ছিল উঞ্ছবৃত্তিকাল আমাদের শরীরস্বভাবে বরাবর কোষেদের স্বভোজন ছিল – ইঁদুরগর্তে চোখ পরিত্যক্ত ধান্যক্ষেতের উচ্ছিষ্ট হাতে ঘরে-ফেরা – স্পষ্ট সেইসব ছবি, স্পষ্টতর আমাকে দেখায় আজো অভুক্ত পথের সুষমা লোভের পসরা-সাজানো রাস্তার দু-ধার কখনো ডাকেনি; আমি কাফকার ক্ষুধাশিল্পী না-পাবার অন্যতর বেদনার কাছে নতজানু ঘিয়ের গন্ধভরা পাতে নিঃশব্দে জল ঢেলে দিয়ে…

  • ছায়াঘরের পিছু

    ছায়াঘরের পিছু

    শিশিরের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছিল ফেসবুকে। যদিও এর দশ বছর আগে আমাদের প্রথম পরিচয়। একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে আমরা দুজন একসঙ্গে পড়তাম। চার বছর পড়ার পর আমি চলে আসি উত্তর ঢাকায়। বাবার নতুন কর্মস্থলের কাছাকাছি। ভর্তি হই নতুন স্কুলে। দক্ষিণ ঢাকার গেন্ডারিয়ায় শিশিরের বাবার নিজের বাড়ি। কিন্ডারগার্টেন ছেড়ে ও ভর্তি হয় পার্শ্ববর্তী মনিজা রহমান গার্লস হাই…