মাতৃবেদনা

দুঃখভারাবনতা মাকে বহুদিন দেখেছি

            একা একা ঘরের ভিতর

মুখ নত, বিশীর্ণ দু-গালে বহমান উচ্ছ্রিত নোনাধারা –

সেই নীরব নত অশ্রুপাতে আমাদের ছোটঘরে

কথাহীন জড়ো হতো পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘের পাথর

বিমূঢ় প্রশ্ন করি শিশু কৌতূহলে,

                               ‘কী হইছে মা?’

‘বুঝবি না তুই, বাবা’, বলতে বলতে

আঁচলে চোখ মুছে মা সরে যেতেন অন্যদিকে …

আমার প্রাত্যহিক স্নানের জলে রোজ

গতায়ু মায়ের নিঃশব্দ অশ্রুধারা মিশে যায়

এবং আমি যুগপৎ শীতল ও উত্তপ্ত হয়ে উঠি

মায়ের চোখের জলের ভাষা খুঁজতে গিয়ে –

ক্রমশ নিজেই মায়ের অবয়ব নিতে নিতে

                তাঁর ক্লিষ্ট দুচোখে

             আমি নোনাজল হয়ে নামি

তাঁর শীর্ণ দু-গালে স্পন্দমান

           লেপ্টে থাকি দুই ফোঁটা জল

              নির্বাক টলমল

                    জলের শরীর ॥