মোস্তফা তারিকুল আহসান

আমি বেঁচে আছি এ নিয়ে অনেকে আপত্তি করে; কারা কারা করে তা নিয়ে কোনো তালিকা দেওয়ার ইচ্ছে আমার নেই। এবং তাদের কথায় আমার খুব রাগও হয় না। এদের মধ্যে কারো কারো আপত্তি বেশ যুক্তিপূর্ণ তবে মৃত্যু নিয়ে আলাদা করে আমি কম ভেবেছি। ভেবেছি, যেদিন খেলা সাঙ্গ হবে সেদিন তো আমার কিস্সু করার থাকবে না; কাজেই…

বাবা মারা যাওয়ার পর তার স্মৃতি হিসেবে আমি তেমন কিছু মনে করতে পারি না, তবে তার রাগত ঈষৎ লাল চোখ মনে পড়ে; সেই চোখের গড়নটার কথা মনে করতে পারি না। মা বলতো ‘তোর চোখ তোর তিনটে বোনের কারো মতো না হয়ে হয়েছে অবিকল তোর বাপের মতো।’ বাপের মতো মানে কেমন তা অবশ্য আমি কখনো পরখ…

আয়শা সকাল থেকে বিকেল বা রাত পর্যন্ত যা যা করে তা নিয়ে তার নিজের কোনো মাথাব্যথা না থাকলেও এলাকার মানুষের মাথা যথেষ্ট ব্যথা করে, তাদের মাথা টনটন করে, চোখ লাল হয়ে যায়, গোখরো সাপের মতো কেউ কেউ ফোঁস ফোঁস করে ওঠে; কারণ সমাজে তার জন্য নাকি অনেকের মানসম্মান নষ্ট হয়। প্রায়শ এরকম হয় আর তাই…

বিয়ের কিছুদিন পর আমি আবিষ্কার করি যে, আমার আমার বর সাধারণ মানুষ নয়, সে বেশ সৃজনশীল, সে কবি কি না আমি বিয়ের আগে জানতাম না, তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বাবা আমাকে বলেনি; আমি বাধ্য কন্যার মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসলাম কোনো কিছু না ভেবেই। তো একদিন দেখি সে ব্রার নতুন নামকরণ করছে, সে বলছে, তোমার দুধপট্টির…

মোস্তফা তারিকুল আহসান একজন কবি কবিতা লেখার জগতে নিজেকে সমর্পিত করার পর তাঁর সামনে অজস্র সমস্যার জন্ম হয়; অনেকে অভ্যাসবশত কবিতা লিখে চলেন কবিতার শাশ্বত সুষমার বা গঠনের কথা না ভেবে। আর যাঁরা সচেতন এবং কবিতার দীর্ঘ ব্যঞ্জনাময় ইতিহাস জানেন, জানেন যে খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে কবিতার চলমান প্রক্রিয়ার সঙ্গে কী কী অনুষঙ্গ অন্বিষ্ট হয়েছে, অথবা কীভাবে কবিতার…

মেয়েটা তার বাঁ-ভ্রু খানিকটা কাঁপিয়ে চোখটা বাইরে আকাশের দিকে ফেরালে যে-দৃশ্যটার জন্ম হয় তার ব্যাখ্যা হাবিব দিতে পারে না; অনুভব করে, বুকের মধ্যে একটা হাহাকার জাতীয় স্বরহীন শব্দ হয় – খানিকটা উত্তেজনাও একে বলা যায়। বাঁ-চোখের তারার মধ্যে যে-সৌন্দর্যময় রং খেলা করছে বিদ্যুৎপ্রভার মতো, তাকে সে কী বলবে? পঞ্চাশের পরে খানিকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জীবন অতিবাহিত…

এই চওড়া সড়ক ধরে হাঁটার সময় বহুদিন ডান-বাম পাশে তরুসারির নাম মনে করতে আমরা প্রায়ই ঝগড়ার মতো করে বসি; অনিন্দ্য কোনো গাছের নাম ঠিক বলতে পারে না, তবু সে স্বরচিত নাম দেয় গাছের : আমরা বড়জোর মেহগনি চিনতে পারি, দেবদারু চিনতে পারি তবে তার পাশে বড় বড় পাতার শাল কিংবা কদমগাছ চিনতে পারি না। সৈকত…