বীথি চট্টোপাধ্যায়
চিরদুঃখিত ভারতের ছোট গ্রাম
মেয়েটাকে নিয়ে তারাও স্বপ্ন দেখে,
বিদ্যুৎ নেই, কলে জল নেই তবু
তাদের মেয়েটা পাশ করে একে একে।
কোনোদিন রাতে জোটে শুধু বাসি রুটি
বান্ধবীদের দ্রুত বিয়ে হয়ে যায়…
আমাদের মেয়ে তবু তার মতে স্থির
একটা বদল আনবে ব্যবস্থায়।
হঠাৎ খরায় ফসলের ক্ষতি হয়
বন্যা মানে তো গ্রাম ডুবে যাবে পুরো,
এলাকায় কোনো ডাক্তারখানা নেই
জড়িবুটি দেয় থুত্থুড়ে এক বুড়ো।
এতকিছুতেও মেয়েটা নিজের মতো
পরীক্ষা দিয়ে শহরে পড়তে যাবে
তার বাবা-মার মুখে বিহবল হাসি
পাশ করলেই একটা চাকরি পাবে।
প্রতিবেশীদের দুহাতে আশীর্বাদ
ডাক্তারি জানা কেউ যদি গ্রামে থাকে,
দুদিনের জ্বরে মরতে হবে না আর
দশ বছরের ছটফটে ছেলেটাকে।
সেই ছোট গ্রাম অপুষ্টি খিদে নিয়ে
ভাঙা মুখচোখ, শুকনো মাটির দাওয়া,
যেটা বেড়ে গেছে সেদিনের পর থেকে
ছোট মেয়েদের আগে বিয়ে হয়ে যাওয়া।
যারা ভেবেছিল কলেজে পড়তে যাবে
তাদের দুহাতে মেহেদি অনিচ্ছার –
সেদিনের সেই ঘটনার পর কেউ
মেয়েকে বাইরে পড়াতে চায় না আর।
লড়াই করে যে এতদূর হেঁটেছিল
কিছু ক্লীব এসে নিয়ে গেল তার প্রাণ,
নিজেকে পুরুষ বলে পরিচয় দিতে
সেদিন লজ্জা পেলেন শাহরুখ খান।
ভারত সেদিন অনেক পিছিয়ে গেল
লণ্ঠনজ্বলা অনেক অভাবী ঘরে,
আবার ভারত দীর্ঘশ্বাস ফেলে
মেয়ে যদি আরো পড়বার জেদ ধরে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.