May

  • May 2023
  • শিরোনামহীন

    শিরোনামহীন

    এদেশের চিত্রকলা আন্দোলনে প্রথম প্রজন্মের শিল্পী কাজী আবদুল বাসেত শিল্প-ঐশ্বর্যের গুণে ও মৌলিকত্বে বিশিষ্ট এক চিত্রকর। তাঁর সৃজনধারায় বহু ভাবনার ছাপ আছে। বাস্তবধর্মী ও বিমূর্ত এই দু-ধারাতেই তিনি কাজ করেছেন। ১৯৬৩ সালে চিত্রকলায় উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যে তিনি শিকাগো যান। এই সময়ে পাশ্চাত্যের শিল্পভুবনে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে এবং আলোড়িত হওয়ার মতো নানা ঘটনা…

  • রবির ‘ল্যাবরেটরি’তে নারীর ক্ষমতা

    রবির ‘ল্যাবরেটরি’তে নারীর ক্ষমতা

    গত শতকের শেষ দশকের শেষ দিকটাতে ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে ডা. আহম্মদ রফিকের নেতৃত্বাধীন রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র থেকে আয়োজন করা হয়েছিল দুদিনব্যাপী এক সেমিনার। তাতে উপস্থাপিত আমার প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে ধর্মীয় মৌলবাদ’। বোধ করি, আমার প্রায়-অকাট্য বিশ্লেষণে অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছিলেন একজন আলোচক, তিনি বেশ প্রতিভারও পরিচয় দিলেন, যখন ‘রবীন্দ্র মৌলবাদ’-এর মতো একটি শব্দবন্ধ হাজির…

  • বাষ্পশকটে রবি

    বাষ্পশকটে রবি

    ভ্রমণ-পিয়াসু বিশ^যাত্রী রবীন্দ্রনাথ কখনোই এক জায়গায় বেশিদিন থিতু হয়ে থাকতে পারতেন না। বিচিত্রের আহ্বানে তাঁকে বারবার ছুটে যেতে দেখি স্থান থেকে স্থানান্তরে। এই যাত্রাপথে পালকি, গো-শকট, ডাণ্ডি, নৌকা, স্টিমার, পদ্মাবোট, জাহাজ, অ্যারোপ্লেন ইত্যাদি বাহনের মধ্যে কবির প্রিয়তম পছন্দটি ছিল রেলগাড়ি। রবীন্দ্রনাথের জীবনের সুদীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়েছে রেলপথেই। ছুটন্ত ইস্পাত-কামরার বাতায়নে বসে তিনি দু-চোখ ভরে চেয়ে থাকতেন…

  • ভাত-বন্দনা

    ভাত-বন্দনা

    প্রণমিয়া পাটনী কহিছে জোড় হাতে। আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে॥ তথাস্তু বলিয়া দেবী দিলা বরদান। দুধেভাতে থাকিবেক তোমার সন্তান॥                      – ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ভাত চিরকালই বাঙালির প্রধান খাদ্য। তাই  ‘ভেতো বাঙালি’ বলে বিশে^ আমাদের বদনাম আছে। আমরা ‘ভেতো’ বটে কিন্তু ভীতু তো নই – মহান মুক্তিযুদ্ধ সেই বদনাম ঘুচিয়েছে! নুনভাতই বলি আর পোলাও-পায়েসই বলি –…

  • রাশনা

    রাশনা

    দরজার সামনে ছায়া দেখে প্রাণ কেঁপে উঠল রেজাউরের। আবার সেই উৎপাত! আবার সেই মেয়েটি এসে দাঁড়িয়েছে দরজার সামনে। এমনিতে রেজাউরের নিজের শারীরিক অস্তিত্ব নিয়ে বর্তমানে টানাটানি। এ-বাড়িতে সে আশ্রিত। বা ঠিক আশ্রিত না হলেও সেই পর্যায়ে পড়ে। তার ফুপাজানের ফ্ল্যাটের একটা ছোট্ট কামরায় বইপত্র টেনে এনেছে হোস্টেল থেকে। ভার্সিটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হল থেকে…

  • নজরুলের সংগীতভাবনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের

    নজরুলের সংগীতভাবনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের

    বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠী – যাদের সুর-তাল-লয় জ্ঞান নেই, আছে কেবল সহজ-সরল ভাষা বোঝার ক্ষমতা, অনুভব-অনুভূতি, মৃত্তিকাসংলগ্ন জীবনবোধ – যা দিয়ে তারা গানের সরস্বতীকে হৃদয়ে ঠাঁই দেয়, তা দিয়েই ওইসব মানুষ নজরুলসংগীতের প্রতি সবসময় তাদের অকৃত্রিম অনুরাগ প্রকাশ করে এসেছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের যে-আবেগ, সেই আবেগের মূলে সক্রিয় প্রণোদনা জুগিয়েছে নজরুলসংগীতের সহজ-সরল বাণী। করাচি থেকে কলকাতায়…

  • পাশ্চাত্য সাহিত্য-সমালোচনা : রূপরেখা

    পাশ্চাত্য সাহিত্য-সমালোচনা : রূপরেখা

    ঐতিহ্যগতভাবে সাহিত্য-সমালোচনা বলতে বোঝায় সাহিত্যকর্মের যুক্তিবাদী, চিন্তামূলক ও অভিনিবেশী ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের রীতি-পদ্ধতি। সাহিত্য-সমালোচনার মাধ্যমে সাহিত্যের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বিচারের সাধারণ নীতিমালা চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া সাহিত্য অধ্যয়নের তত্ত্ব ও পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করাও তাত্ত্বিক সমালোচনার কাজ। অ্যাকাডেমিক কাজ হিসেবে সমালোচনা পাঠ বা টেক্সটের আলোকে পাঠকের অনুভব, প্রতিক্রিয়া, চিন্তা, জিজ্ঞাসা ইত্যাদি প্রকাশ করে। ইংরেজি পৎরঃরপরংস…

  • আনিস চৌধুরীর গল্পের মানুষেরা

    আনিস চৌধুরীর গল্পের মানুষেরা

    আনিস চৌধুরীর জন্ম ১৯২৯ সালের ১লা এপ্রিল, কলকাতায়। পিতৃকুলের নিবাস ছিল কুমিল্লা জেলার কসবা থানার গোপীনাথপুর গ্রামে। লেখালেখির সূচনা কলকাতায় ছাত্রজীবনেই, সাতচল্লিশ-পূর্বকালে। ১৯৪৪ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। অতঃপর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ.এ. পরীক্ষা পাশের পর ভর্তি হন শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া অসমাপ্ত রেখেই দেশবিভাগের পর ১৯৪৭ সালে পরিবারের…

  • ঘরের ছবি

    ঘরের ছবি

    লাল এক বালতি কাপড় নিয়ে আমলি তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেল। তার তুলনায় তানজুর সিঁড়িতে পা উঠছে না। তানজুদের কলেজ ছিল পাঁচতলা। হরহামেশা তিন-চারতলায় দলবেঁধে ওদের উঠতে হতো, ক্লাসে হোক কি ক্যাফেটারিয়ায় বসে আড্ডা, সবার  আগে তরতর করে সিঁড়ি ঘুরে ঘুরে উঠে যেত তানজু। মলি বলতো, তুই জিন, পরি, ওদের ঘুরে বেড়াতে পা লাগে…

  • বিরসা এলিজি

    ১ ঘুমিয়ে তোমার জন্ম, অথচ দেখেছো অপরিমেয় আকাশ স্বর্গের সোপান বেয়ে উঠে গেছে দূর নীলিমায় অনেক উঁচুতে নক্ষত্রের হাট বসেছে যেখানে, তবে মায়েরা সেখানে নেই, আছে শুধু দেবদূত, যার হাত ধরে নিরিবিলি চরাচর পুষ্প-উদ্যানে তোমার আর অজস্র সাথির – রাত্রি নিশুথি হলে দেখা দাও মায়েদের তারাদের সুবর্ণ-মেলায়, জ্বলছে পুষ্প-প্রদীপ কতশত, আকাশে বসেছে যেন গল্পের আসর…

  • হঠাৎ আলোর শব্দ

    দীর্ঘ নির্জনতার বিষাদ বেদনার অজস্র পঙ্ক্তি, অবরুদ্ধ কষ্টকাল ভাঙা করোটির ভেতর অশ্লীল কাঁকড়ার পা বে-আব্রু রাত্রির লাল তৃষ্ণা  বারুদের বিশ্রীগন্ধ, করুণ কলহ দীর্ঘশ্বাসে বসে থাকা মাছরাঙাদের  শূন্য ঠোঁট  ঝরা পাতা বিষণ্ন দুপুর  মাথা নিচু বাড়ি ফেরা বিমর্ষ হাটুরে  হঠাৎ উধাও তার অন্তঃপুর  তীব্র শূন্যতা জড়ানো  পা ছিঁড়ে নীলিমার স্বপ্নঘুড়ি বাড়ি থেকে উড়ে যায় সব ঘরবাড়ি  পড়ে…