মিনার মনসুর
বন্ধুদের নিয়ে কে না গর্ব করে।
একজন এইমাত্র বঙ্গোপসাগরকে ধরে এনে চেপেচুপে ঢুকিয়ে দিলো তার ব্যক্তিগত সুইমিংপুলে। দুর্গম দ্বীপে জন্ম। সমুদ্র তাকে কতভাবেই না হেনস্থা করেছে হতদরিদ্র শৈশবে! এখন তার শখ সমুদ্র পোষা।
দ্বিতীয়জনের রক্তে মিশে আছে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্য। স্বভাবতই সে ইয়ার-দোসত্মদের নিয়ে ঘটা করে ঘুড়ি ওড়াতে পছন্দ করে। তাই একদিন সে আকাশটাকে লাটাইয়ের সুতোর সঙ্গে বেঁধে উড়িয়ে দিলো তার সদ্যনির্মিত রংমহলের বিশাল জলসাঘরে।
তৃতীয়জনের বাবা ছিলেন শিকারি। শিকার করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। কীভাবে যেন বাবা হয়ে গেলেন সচিবালয়ের করণিক। কিন্তু আমৃত্যু স্বপ্ন দেখতেন বাঘ শিকারের। সমত্মানের রক্তেও সংক্রমিত হয়েছিল বংশানুক্রমিক সেই নেশা। অধসত্মনরা তা জানতেন বলেই বড়কর্তার সন্তুষ্টির জন্যে বললেন, ‘স্যার কি সুন্দরবন যাবেন, নাকি সুন্দরবনকে মিন্টো রোডে…’। – ‘আমার কি দম ফেলার ফুরসত আছে, ওটাকেই বরং…।’ আদেশ পালিত হতে সময় লাগে না।
এমন বন্ধুদের নিয়ে কে না গর্ব করে!
পা দুটিকে বলি, এইসব দেখেও কি তোমার বোধোদয় হবে না? গাঢ় তন্দ্রার ভেতর থেকে গভীর নিরাসক্তির সঙ্গে ওরা আমাকে দ্যাখে। পরক্ষণে অদ্ভুত এক কু-লী পাকিয়ে শুয়ে পড়ে।
ঢাকা
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.