সেতুর উপর গালিয়া

মস্কো নদীর সেতুর উপর হঠাৎ হলো সাক্ষাৎকার

নদী তখন সূর্য-তেজে গলন্ত এক দীপ্ত ধাতু

ফাল্গুন না চৈত্র মাস ঠিক মনে নেই এখন আমার

উরালদেশি আধো আধো মিষ্টি রুশি উচ্চারণে

মনের ভিতর কুয়াশানীল, চোখেও কী আশ্চর্য জাদু

গলার রুমাল ঘোমটা হলো, কপালে টিপ কী বিভ্রমে

হঠাৎ সিঁদুর, বেলাশেষের ক্লান্ত আলো এক ঝলকে

স্নিগ্ধ শিথিল জ্যোৎস্না যেন রূপান্তরে অকারণে

পার্কে তুমি ভ্রুক্ষেপও তো করলে না কী বললো লোকে

আমার যত দর্শনকে অনায়াসে বিনাশ্রমে

বন্ধ করে ধরলে তুলে উন্মুখ ঠোঁট পদ্মকলি

অতীতকাল ভবিষ্যৎ আর বর্তমানকে জলাঞ্জলি

সঙ্গে সঙ্গে দিয়েছিলাম, জীবন থেকে চারখানি দিন

হারিয়ে গেল, যেমন হারায় মোহনাতে খরস্রোতা

নদী এবং আমিও যদি পালিয়ে যেতাম সন্ধানী তিন

চোখগুলোকে ফাঁকি দিয়ে, তবে কি আর যন্ত্রদানব

অপহরণ করে তাকে, নিয়ে পালায় সেই গালিয়া

‘সর্বস্ব গেল গেল’ বলে তবে বিলাপ সরব

করি না আর, অশ্রু মুছে বলি না দাসভিদানিয়া

সেই তো আমার ভাগ্য, তবু, সেই তো আমার বিষণ্নতা।