চার কুড়ি বছরের কৃষাণী হরিদাসী
মলিন ধূসর ছনঘরে একা পরবাসী।
হাসতে ভুলে গেছে, প্রহর কাটে নয়নজলে
কোথায় সংসার, কেউ নেই আজ ওর দলে?
একে একে বিয়োগ হয় জঠরের জীবন
একাত্তরে যুদ্ধে হারায় একমাত্র পুত্রধন।
মা-মেয়ের সময় কাটে ভয়ে আর ভয়ে,
দ্বাদশী তুলসীর সতীত্ব শেষ পরাজয়ে।
দোসর পাকিও ছাড়েনি তিরিশের মাকে,
স্বাধীনতায় সব হারায় যুদ্ধের দুর্বিপাকে।
স্বামীও যোদ্ধা ছিল সমরে আট মাস
বীরযোদ্ধা পঙ্গু হয়ে ঘরে তাঁর সর্বনাশ!
মাটিতে নতুন পতাকা ওড়ে, হরিদাসী একা
সব হারিয়ে নিঃস্ব নারী, দেয় না কেউ দেখা।
একে একে স্বামীর জমি বেহাত হয়ে যায়,
কেঁদে কেঁদে সর্বস্বান্ত অসহায়া বুক ভাসায়।
কৃষাণী হরিদাসী স্বাধীনতা খোঁজে আজো,
ভাবে সে, বিশ্বাসঘাতকতা জাতির কাজও?
একাত্তর-চেতনা ধুলায় মিশে, কাঁদে মানচিত্র
সর্বহারা হরিদাসী শত্রু হয়, দুশমন হয় মিত্র!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.