দূরে, চরের ওপারে
তারার মতো জ¦লছে বিন্দু বিন্দু আলো
ঘূর্ণির মতো হাওয়া এসে
হাঁ করে গিলে নিচ্ছে বালির আস্তর
নদীর স্ফীত ঢেউ পাড়ে ফেলে গেছে
এই ছাতিম পাতা
যা এখনো সবুজ
সতেজ তার শিরা-উপশিরা।
উলুখড় চূর্ণিত চোরাবালি
অজগরের মতো টেনে নিচ্ছে পা
হাতের তালুতে ফুটে উঠছে
রাশির নিয়তি
ভয়ের জাফরি
চিত্রে আঁকা বালিরেখা
পথের চিহ্ন মুছে দূরে সরে গেছে
কেবল উদ্ভ্রান্ত চুলে
বাতাস এসে কেটে যাচ্ছে বিলি।
ধু-ধু অন্ধকার শ্মশানশাসিত
এই জনশূন্য চরাচর
মনে করিয়ে দিচ্ছে
সেই কালো বেড়ালের কথা
লেবুগাছের গোড়ায় প্রতিদিন যে
একা একা এসে
কামনা করে
মাছের কাঁটা
মুরগির ঝোলমাখা ভাত।
দলদলে চরে
কম্পিত শরীর দেবে যেতে যেতে
ড্রয়ারে জমানো আয়ু
বেলিফুলের গন্ধ মেখে
নত হয়ে অপেক্ষা করে
ঘোরগ্রস্ত কোনো অনুরক্ত ভোরের।
বসন্তে যখন গাছ থেকে ঝরে পড়ে পাতা
আরক্ত গুঞ্জনে পোড়ে মন
হু-হু দুপুর ছাপিয়ে
বাঁশবন ডিঙিয়ে ভেসে আসে
মিলনকাতর কোকিলের শিস
কারো কারো ফিনফিনে শরীরে
ধরিয়ে দেয় উতলা কাঁপন
অতলান্ত পাথর ঢুকে যায়
বুকের গহিনে।
চোরাবালিতে কেঁপে কেঁপে
হয়তো তলিয়ে যাবে এই দেহ
চুলের সিঁথির মতো চিকন দিগন্তে
শুধু আমার মন উড়ে যাবে ঘুঘুর ডানায় …
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.