বাতায়ন-পাশে

চিত্রকলা নিয়ে নিয়ত নিরীক্ষাপ্রবণ নাজলী লায়লা মনসুর। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে সাবঅল্টার্ন ফর্মে চলমান দৃশ্যকাব্য রচনায় আগ্রহী তিনি। অভ্যস্ত-হাতে ক্যানভাসে প্রয়োগ করেন উজ্জ্বল রং। তাঁর ছবির অন্যতম বিষয় নারী – সমাজে তার অবস্থান, অসুবিধা ও তার প্রতি হিংস্রতা। এ-কারণে অনেকে তাঁকে নারীবাদী চিত্রশিল্পী হিসেবে আখ্যা দিলেও তিনি সে-বৃত্ত ভেঙে দেন চিত্রে পুরুষ-অবয়বের সমান উপস্থিতির মধ্য দিয়ে। বাস্তববাদী ধারায় চিত্রচর্চায় মনোযোগী নাজলীর চিত্রপটে ফুটে ওঠে মানুষের শূন্যদৃষ্টি, কখনো লোভাতুর চাহনি, সতর্কতার সঙ্গে অন্যের দৃষ্টি এড়িয়ে চলার প্রবণতা, যা সমাজে বিরাজমান উঁচু-নিচু ভেদাভেদ, শেকড়হীনতা, নির্যাতন-নিপীড়নকে পরিস্ফুট করে তোলে। তাঁর চিত্রকর্ম অনেক ক্ষেত্রেই ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে প্রতিভাত।

আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী বাহন ‘রিকশা’ এবং ‘রিকশাচিত্র’ ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর ছবিতে। বিষয়বস্তুর গুণে ও অঙ্কন পারদর্শিতায় তাঁর ক্যানভাস রূপান্তরিত হয় কাহিনিতে। হয়তো এর মধ্য দিয়েই তিনি পরিস্ফুট করতে চান মানুষের স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে।

নাজলী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে ১৯৭৪ সালে স্নাতকোত্তর করেন। শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের সরকারি আর্ট কলেজে। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে রাজশাহী শহরে। প্রচ্ছদের চিত্রকর্মটি ২০০২ সালে তেলরঙে আঁকা। সংগ্রাহক আবুল খায়ের।