শুভময়ী বনলতা সেন

(উৎস : জীবনানন্দ দাশ)

‘ভ্রমণে আনন্দ ছিল। হেঁটে হেঁটে পথে

                                  কেটে গেছে অজস্র সময়

মনে রেখেছেন। সবকিছু এতদিনে

                                   হয়নি তো এতটুকু ম্লান

কবে, কোন অঘ্রানের মাঠে

ধানকাটা হয়ে গেলে কতবার কুড়ালেন খড়

চুম্বনের পূর্বাহ্নের মতো রাত্রি আসে

শিশিরের শব্দছবি ছুঁয়েছেন ঘুমভাঙা হাতে

কোনো-এক শঙ্খবালিকার কথা মনে থেকে আছে

কার ছিল ধানমাখা চুল

শাঁইবাবলার ঝাড়, অর্জুনের সহজ ছায়ায়

নারীরা জুড়েছে কথা, অবিরাম কথার খেলায়

                 শুনেছেন উদয়াস্ত নদীদের স্বরচিত গান

তাকেও তো মনে আছে। করবীর সাদা স্তন থেকে

                        যে বালিকা তুলেছিল উন্মোচিত ফুল

গাঙরের জলে ছিল ভাসমান ভেলা

                       বেহুলাকে দেখেছেন; চোখে তার বেদনার দাহ

পুত্রের পাপের শরে বিদ্ধ ছিল বৃদ্ধ বিম্বিসার

                                    অশোকের চেষ্টা ছিল পাপস্খলনের

পথের সম্মুখে পথ। বন্দরে ভিড়েছে কত জাহাজের ভিড়

কত সূর্য অস্ত গেল। কত সূর্য হয়েছে উদয় …

সামান্য ক্লান্তির চিহ্ন ! তবুও তো কবি

                               এসেছেন বাংলায় শতবার ফিরে।’

জলের আনন্দ থেকে পদ্মহাসি নিয়ে

এমন সৌহার্দ্যকথা মন খুলে শোনালেন যিনি

                          এর নাম শুভময়ী বনলতা সেন।