ওয়াসি আহমেদ
-

জাদুগাড়ি
শেষমেশ আলী আক্কাস যখন ঠিক করে ফেলল কপালে যা আছে, বাড়ির ভিটি বেচে হলেও একটা ব্যাটারি রিকশা কিনে ফেলবে, বউ রমিজা আল্লা গো, এইডা কী কও বলে আঁতকে উঠলেও সে শোনার গরজ দেখাল না। চিন্তাটা এক-দুদিনের না, অনেকদিন ধরেই মাথায় ঘুরঘুর করছে। রোজ সকালে মহাজনের গাবতলি গ্যারেজ থেকে প্যাডেল রিকশাটা বের করে রাস্তায় নামতেই মনটা…
-

অনাহূত স্বপ্নের চিৎসাঁতার
ঘরে ঢোকার মুহূর্তে ভেবেছিল ভেতরটা অন্যরকম হবে। হওয়ারই কথা। বেলা দুপুর, শেষ ফেব্রুয়ারির আলো-হাওয়ায় রমরমা আকাশ-মাটি। কিন্তু তার মন বলছিলদরজা-জানালা আটকানো ঘরে পা দিয়ে দেখবে অল্প ওয়াটের বাল্বে ঝিমঝিমেআলো-আঁধারি। বাস্তবে মোটেও সেরকম হলো না। মাঝারি আয়তনের ছিমছাম ঘর – করপোরেট অফিসে যেমন অভ্যাগতদের জন্য বসার বা অপেক্ষা করার সুব্যবস্থা থাকে। পর্যাপ্ত আলো ঘরের ছাদে-দেয়ালে-মেঝেতে, এসি…
-

নাশপাতির শেষকৃত্য
পঁচিশ বছর পর এবাদুল্লা যখন এলাকায় ফিরল, তখন তার লাপাত্তা হওয়ার সময় যেমন শোরগোল উঠেছিল তেমন কিছু না ঘটলেও নিকট আত্মীয়স্বজন বা চেনাজানা বয়স্করা যে ঘটনার কিনারা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ল তা না বললেও চলে। বয়স্করা পষ্ট মনে করতে পারল, এ সেই এবাদুল্লা যে বহুকাল আগে টক-মিষ্টি কুল ফেরি করে বেড়াত, কিন্তু সেসব আদতে কুল…
-

ধারাবাহিক ধারাভাষ্য
আসার পর থেকে সাবলীল গলায় রেইপ রেইপ শুনতে হচ্ছে নওশিনের। বাংলায় কথাটা যত অর্থময়ই হোক বা ধ্বনিব্যঞ্জনায় তীব্র ইঙ্গিতময়, দেখা যাচ্ছে ধষর্ণের চেয়ে লোকজনের রেইপই পছন্দের। বাংলাটা ইংরেজির চেয়ে কঠিন – এ হতে পারে এক কারণ, অন্য কারণের মধ্যে মনস্তত্ত্ব হয়তো একটা ফ্যাক্টর। কী সেটা ভাবতে গিয়ে নওশিনের মনে হলো, হতে পারে বর্বরতা আড়াল করার…
-

প্রিয় হাসনাতভাই
সাতমসজিদ রোডে ছায়ানটের অপরিসর আঙিনায় জনাপনেরো নারী-পুরুষ। সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। মাস্ক-মোড়া মুখে কয়েকজনকে চেনা-চেনা লাগলেও আমার দৃষ্টি অদূরে লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানের দিকে। কিন্তু ততক্ষণে ওটার ডালা আটকানো সারা, মৃদু শব্দে ভ্যানটা পিছিয়ে মূল রাস্তায় গড়িয়ে নামতে বাকি। কে যেন এগিয়ে এসে বললেন, দেখবেন? আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে ঘড়ি দেখছি, এখানে তো আরো আধঘণ্টার মতো থাকার…
