দুখু বাঙাল

  • শূন্য হাতে রাজসিক প্রত্যাবর্তন   

    না-চেয়েই কোনোকিছু  যে-তোমার ডানপাশে সারাপথ ছায়া হয়ে হাঁটে ভালোবাসার হিজাব-আবৃত্ত হয়ে মনে রেখো তারে। না-পেয়েই কোনোকিছু যে-তোমার ভুলটাকে ফুল বলে লড়ে সব ঘাটে প্রেমের আলখেল্লা পরে একজীবন খুঁজিয়ো তাহারে। না-ছুঁয়েই কোনোকিছু যে-তোমার দুঃখরাতে হাত ধরে নিয়ে যায় চাঁদোয়াসড়কে বিরহের হাঁস হয়ে পাড়ি দিয়ো লক্ষ মাইল তাহারই অন্তরে। শূন্য হাতে রাজসিক প্রত্যাবর্তন চিরদিন প্রেমেই মানায়।

  • বাবার দৃষ্টির মুগ্ধতা

     কিছুই লাগতো না জানি বাবার জমির একমুঠো কলই শাক ছাড়া   অথচ অসুরের মতো ছিঁড়ে আনলি ফসলসমেত গোটা মাঠখানি। কিছুই লাগতো না জানি বাবার গাছের একটি কচি ডাব ছাড়া অথচ দানবের মতো ঘাড়ে করে বয়ে আনলি আস্ত দিঘিটাই। কিছুই লাগতো না জানি বাবার ভিটের একমুঠো বাসক ফুল ছাড়া অথচ দৈত্যের মতো ছিঁড়ে আনলি গোলাপের পুরোটা সংসার।…

  • তাকাও একবার তুমি  

    যে-দৃষ্টিতে তাকালে অঝরে মন্ত্রবাণী ঢেলে দেয় নিষ্ফলা আকাশ সে-দৃষ্টিতে তাকাও একবার  যে-দৃষ্টিতে তাকালে রাত সেও বনে যায় রমণীয় চুলের বিস্তার সে-দৃষ্টিতে তাকাও একবার যে-দৃষ্টিতে তাকালে পাখির ঝাঁকের মতো স্বপ্নেরা বাড়ি ফিরে আসে সে-দৃষ্টিতে তাকাও একবার। বাগানের ফুল নয়, আত্মার গহন থেকে রং তুলে দাও মস্তকপ্রসূত প্রেম নয়, অকৃপণ রোদ হয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাও তাকাতেই প্রেমে…

  • একদিন ঘাস হয়ে যায়

    তুমি আছ বলেই আজো আমি রাজপথে মিছিলে মিছিলে  তুমি আছ বলেই আজো আমি অস্ত্র কাঁধে গহিন জঙ্গলে তুমি আছ বলেই আজো আমি পাথর ছুড়ি পশ্চিম তীরে  কিন্তু কার সঙ্গে ফাইট করি বলো! যেদিকে তাকাই দেখি প্রতিবন্ধী সব।  হৃৎপিণ্ড ড্যামেজ হয়ে গেছে কারো কারো কারো চোখে আদিগন্ত ছানির বিস্তার কেউ আবার শোনেই না দুই কানে পাখির…

  • কার নাম হয়ে যায় লেখা

    পরবাসে বাস করে জুয়াড়ির মতো ফেরো তুমি শূন্যহাত নিয়ম মান্যের ঘরে অনিয়মে বসে আছে তোমার ওই মন জনারণ্যে অনায়াসে নগ্নদেহে হেঁটে চলে সন্ন্যাসী যেমন তুমি ও তোমার মনে রাতদিন বেড়ে চলে কেবলই সংঘাত। কোন সে-সুদূর দেশে আলো ফেলে আমি তার খুঁজি পথরেখা স্বর্ণমুদ্রার হাটখানি লিজ নিয়ে বসে আছে রাত্রির আকাশ রমণী আসে না আসে মেয়েলোক…

  • অগণিত শব্দের মিছিল

    অভিধানের অর্গল ভেঙে স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের নামের জয়ধ্বনিতে বেরিয়ে পড়ল অগণিত শব্দের মিছিল। অথচ সেই স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র কি-না খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এলো সবশেষে। সাতচল্লিশে ভারতবর্ষে, একাত্তরে ফের বাংলাদেশে ইউরোপ-আফ্রিকায় পৃথিবীর সর্বত্রই একই চিত্র। বুঝলাম স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের শরীর-স্বাস্থ্য দেশে  কি বিদেশে কোথাও ভালো থাকে না।  নিরাপদ বন্দিশালায়ও এরা রক্তাক্ত হতে থাকে ক্রমাগত হয়তো নিপীড়ন-নির্যাতন আর…

  • বিরহের হাঁস

    না চেয়েই কোনোকিছু  যে তোমার ডানপাশে সারাপথ ছায়া হয়ে হাঁটে ভালোবাসার হিজাব-আবৃত হয়ে মনে রেখো তারে। না পেয়েই কোনোকিছু যে তোমার ভুলটাকে ফুল বলে লড়ে সব ঘাটে প্রেমের আলখেল্লা পরে একজীবন খুঁজিয়ো তাহারে। না ছুঁয়েই কোনোকিছু যে তোমার দুঃখরাতে হাত ধরে নিয়ে যায় চাঁদোয়াসড়কে বিরহের হাঁস হয়ে পাড়ি দিয়ো লক্ষ মাইল তাহারই অন্তরে। শূন্যহাতে রাজসিক…

  • সামুদ্রিক অভিবাদন

    আমার বর্ণমালা কালাপানির গর্র্ভজাত আলোকসন্তান   যারা প্রত্যুষের লাল হয়ে, ঝলমলে আলো হয়ে মুহূর্তে দখল নেয় পৃথিবীর সমস্ত ভূভাগ  সালাম জব্বার আর ফাগুনের সহজাত ভাই কি না লাল প্রিয়, প্রিয় তার রক্তাভ দরবারি পোশাক প্রাণদানে প্রাণজয়ী – চিরদিনের অব্যয়ীকুসুম। জাতিসংঘের বিস্তৃত হলঘরে জনকের তর্জনীর মতো যখন আমার বর্ণমালার রাজসিক উপস্থিতি ঘটে মনে হয়, এই বুঝি লালকেল্লার…