ক্রোড়পত্র

  • বাঙালি জাতির অপদার্থতা : ডিরোজিও ও বিদ্যাসাগরের স্মৃতিরক্ষায় ব্যর্থতা

    বাঙালি জাতির অপদার্থতা : ডিরোজিও ও বিদ্যাসাগরের স্মৃতিরক্ষায় ব্যর্থতা

    শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায় হেনরি লুই ডিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯, ১৮ এপ্রিল-১৮৩১, ২৬ ডিসেম্বর) ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০, ২৬ সেপ্টেম্বর-১৮৯১, ২৯ জুলাই) বঙ্গীয় জীবনের দুই অবিস্মরণীয় চরিত্র; কিন্তু বিস্মৃতিপরায়ণ বাঙালি তাঁদের দুজনের ক্ষেত্রে একই রকম উদাসীনতার স্বাক্ষর রেখেছে তাই নিয়ে আজকের আলোচনা। আবেগ-বিহ্বল জাতি হিসেবে বাঙালি যেমন অদ্বিতীয়, দায়িত্বজ্ঞানহীনতাতেও তেমনি দ্বিতীয় রহিত। মৃত্যু নিয়ে তার বিহ্বলতা যেমন অতুলনীয়,…

  • কতটুকু আছেন, কতটুকু নেই : বিদ্যাসাগর

    কতটুকু আছেন, কতটুকু নেই : বিদ্যাসাগর

    পবিত্র সরকার  ‘১. কী বাকি থাকে আমাদের জন্য? যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেন এবং এক সময় ইতিহাস হয়ে আমাদের থেকে দূরত্বে চলে যান, তাঁদের মধ্যে প্রধানত দু-ধরনের লোক থাকেন। এক, যাঁদের কথা আমরা ইতিহাস বইয়ে পড়ি, কিন্তু যাঁরা ওই বইয়ের পাতাতেই সমাধিস্থ থাকেন। তাঁদের অনেকের নাম ও বিবরণ আমাদের পাঠ্য মাত্র, মুখস্থ করার এবং (পরীক্ষার পরে,…

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বেতালপঞ্চবিংশতি : ফিরে দেখা

    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বেতালপঞ্চবিংশতি : ফিরে দেখা

    লোকমান কবীর বেতালপঞ্চবিংশতি (১৮৪৭) ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা ওরফে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-৯১) প্রথম প্রকাশিত গদ্যসাহিত্য। হিন্দি গ্রন্থ বৈতালপচ্চিসী অবলম্বনে এটি রচিত হলেও বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও বিকাশে গ্রন্থটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই পুস্তকের প্রথম সংস্করণে লেখক হিসেবে বিদ্যাসাগরের নাম লেখা ছিল না। এটি রচিত হয়েছিল ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পাঠ্যবইয়ের সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে। কেননা এর পূর্বে ওই কলেজে…

  • নানামাত্রায় অনন্য বিদ্যাসাগর

    নানামাত্রায় অনন্য বিদ্যাসাগর

    আহমদ রফিক এক ‘বিদ্যাসাগর’ শব্দটি উচ্চারণের সঙ্গে-সঙ্গে আমার চোখে ভেসে ওঠে মেদভারহীন, স্থূলতাহীন, শীর্ণ অথচ দৃঢ়সন্নিবদ্ধ ঋজু পেশির স্থাপত্যে গড়া নির্ভীক, সাহসী একজন প্রকৃত হোমো সেপিয়েন প্রজাতির আধুনিক, আদর্শ মানুষের প্রতিচ্ছবি। তাঁকে শিক্ষিত বাঙালি নানা অভিধায় চিহ্নিত করলেও দুটো কথায় তাঁর সার্বিক পরিচিতি – বিদ্যাসাগর এবং দয়ার সাগর। বাঙালি মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের কাব্যপঙ্ক্তিতে ধৃত এ-পরিচয়…

  • কালিদাস কর্মকারের রাগ ক্ষোভ ভালোবাসাময় জীবন

    কালিদাস কর্মকারের রাগ ক্ষোভ ভালোবাসাময় জীবন

    স্বাধীনতা-স্বাধিকার-মানবতার শিল্পী কালিদাস কর্মকারের প্রয়াণে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যথিতই শুধু হইনি; রিক্ত হয়েছি। হারিয়েছি ছাত্রজীবন থেকে এযাবৎকালের প্রিয় অভিভাবককে। তিনি নিমগ্নতার শিল্পী। তাঁর শিল্প কতটা মননশীল, পাওয়া যায় তাঁর কথায়-কাজে। একবার তিনি আদরের ভাঁজে ভাঁজে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মানুষের মন পলির মতোই নরম। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতার লড়াই, বঞ্চনার শিকার এই মানুষের মন মরে যাচ্ছে। কিন্তু…

  • কালিদাস কর্মকার ও গ্রাফিক আতিলিয়া-৭১

    কালিদাস কর্মকার ও গ্রাফিক আতিলিয়া-৭১

    পোল্যান্ড থেকে ফিরে এসে শিল্পী কালিদাস কর্মকার ’৮৭ সালে ঢাকায় কিছুদিন স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। স্থপতি ও শিল্প-সমালোচক সামসুল ওয়ারেস তাঁর বিশিষ্ট বন্ধু ছিলেন। ধানম– ৬নং রোডে সোনালী ব্যাংক মহিলা শাখার পাশের বিল্ডিংটি ওয়ারেসভাইয়ের আর্কিটেকচারাল ফার্ম। ধানম–র বাড়িগুলো ছিল এক বিঘা পস্নটের ওপর নির্মিত এবং সামনের দিকে বিরাট লন। লনের কোনায় চারদিকে দেয়ালঘেরা একটি রুম…

  • পাললিক চেতনার অদম্য কারিগর

    পাললিক চেতনার অদম্য কারিগর

    নদীবিধৌত সমতট ভূমির মানুষ হিসেবে সবুজ প্রকৃতি ও বিসত্মৃত পরিসরের নৈসর্গিক উপাদান ইত্যাদি সঙ্গী করেই এতদাঞ্চলের মানুষের বিকাশ ও সমৃদ্ধি। দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি আমাদের স্বভাবজাত প্রেমের ভিত্তিও সেই একই উৎসধারা-উৎসারিত। এটি খুবই সাধারণ প্রবণতা বাংলাদেশের মানুষের যে, ষড়ঋতুর বিচিত্র রূপরসগন্ধ ও রং থেকে শুরু করে ঝড়বাদলসহ তাবৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সবকিছুকেই তাদের জীবনের…

  • কালিদাস কর্মকার : মরমি ডানায় অনন্তযাত্রা

    কালিদাস কর্মকার : মরমি ডানায় অনন্তযাত্রা

    সৃজনকাতর ও উদ্যমী ছিলেন তিনি একই সঙ্গে। বাংলাদেশের আর কোনো শিল্পী নিজের শিল্পকর্ম নিয়ে এত দেশ ভ্রমণ করেননি। উত্তর থেকে দক্ষক্ষণ গোলার্ধের যে-অক্ষাংশেই পৌঁছেছেন সেখানেই আয়োজন করেছেন নিজের কাজের প্রদর্শনী। যে জল-হাওয়া-মাটি তাঁকে ঘিরে রেখেছে তার মধ্যেই তিনি শিল্পের সংকেত তালাশ করেছেন। মেঘে মেঘে অনেক ঘুরে, অনেক মাটি ও জলকে শিল্পাঞ্জলি দিয়ে তিনি আজ মহাশূন্যে…

  • কালিদার চলে যাওয়া

    কালিদার চলে যাওয়া

    অক্টোবর, তাঁর মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগে, কালিদাস কর্মকার ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। গায়ে টকটকে লাল জামা, লাল রুমাল দিয়ে চোখ মোড়া, দুই হাতের পাঁচ আঙুলে অজ্ঞাত কোনো নৃত্যের মুদ্রা। পেছনে টকটকে লাল ফুলের তোড়া, তাতে হালকা হলুদের ছোঁয়া। ছবি দেখে মন্তব্য করেছিলাম, কালিদা, এত উচ্ছ্বাস, এত আনন্দ কোত্থেকে পান? উত্তরে কালিদা লিখে পাঠিয়েছিলেন, আর…

  • দেশের সব ক্ষেত্রেই এখন গভীরতাহীন চমক দেখা যায়  রিজিয়া রহমান

    দেশের সব ক্ষেত্রেই এখন গভীরতাহীন চমক দেখা যায় রিজিয়া রহমান

    সাক্ষাৎকার গ্রহণ : স্বকৃত নোমান স্বকৃত নোমান : কদিন আগেই শেষ হলো একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলা নিয়ে আপনার অনুভূতি জানতে চাই। রিজিয়া রহমান : বইমেলা লেখক-প্রকাশক ও পাঠকদের ঘনিষ্ঠ একটা সম্পর্কের ব্যাপার। বইমেলা শুরু হয় একটা উদ্যম দিয়ে, শেষ হয় বিষাদ দিয়ে। শেষ হলে মনে হয়, আহ্, শেষ হয়ে গেল। প্রতিবছরই বইমেলার সময় একটা উদ্দীপনা…

  • রিজিয়া রহমানের আবে-রওয়াঁ   জলরেখায় লেখা ইতিহাস

    রিজিয়া রহমানের আবে-রওয়াঁ জলরেখায় লেখা ইতিহাস

    আমি বুড়িগঙ্গা। আমি চলমান এক আবে-রওয়াঁ। আমার বেদনার্ত বুক ঘেঁষে, জলের দেবী ভেনাসের মত উঠে দাঁড়িয়েছে আমার প্রায় চারশো বছরের প্রিয় সহচরী, আমার ঢাকা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমার বুকে জড়িয়ে আছে তার মহার্ঘ সেই জলে ভাসা শাড়ি। জলে ভেসে থাকলে তাকে জলই মনে হয়, দেখা যায় না। বোঝা যায় না। এতো দীর্ঘ টানাপড়েনের সুদীর্ঘ…

  • কথাশিল্পী রিজিয়া রহমানের আত্মজীবনী  এক উপমহাদেশের আত্মস্রোত

    কথাশিল্পী রিজিয়া রহমানের আত্মজীবনী এক উপমহাদেশের আত্মস্রোত

    সাহিত্যকর্ম বা তাঁর স্রষ্টা প্রসঙ্গে আলোচনার শুরুতেই সময়ের অনুসন্ধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেই অনুষঙ্গে প্রশ্নটি হয়ে থাকে – তিনি কোন সময়ের লেখক? বা তাঁর অমুক উপন্যাসটি কোন সময়ের? বাস্তবতার অনুধাবন বা বিষয়ের প্রাসঙ্গিকতার কথাই বলুন না কেন, এটা তো সত্য যে, সাহিত্যের প্রবহমানতার স্রোতকে বুঝতে হলেও বিষয়টির গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। আর…