শ্রদ্ধান্জলি

  • বাংলার যুগপুরুষ আনিসুজ্জামান

    বাংলার যুগপুরুষ আনিসুজ্জামান

    বাংলা সাহিত্য ও ভাষার ইতিহাস রাষ্ট্রের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থেকেও কোনো রাষ্ট্র-সীমান্ত দ্বারা বদ্ধ নয়। সাহিত্য সীমান্ত নয়, দিগন্ত। আনিসুজ্জামানের দীর্ঘ কর্মজীবন এবং পুস্তকসমূহে তিনি আমাদের এই চরম শিক্ষা দিয়েছেন। আনিস স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ হয় ঢাকা শহরে আমার ডক্টরাল গবেষণাকালে। ২০১৭ সালের আগে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্বন্ধে আমি যা জানতাম সবই বইপড়া বিদ্যা।…

  • তিনিই তো বসন্তজাতক আনিসুজ্জামান

    তিনিই তো বসন্তজাতক আনিসুজ্জামান

    আনিসুজ্জামানের স্বরূপের সন্ধানে বইটি যে-বয়সে পড়ি তার মর্মবস্তু পুরোপুরি অনুধাবনের বয়স সেটি ছিল না। কুমিল্লা জেলার সরকারি গ্রন্থাগারে এক দুপুরে সদ্য স্কুল-পেরুনো আমি বইটির সাদামাটা নামের মধ্যেই যেন কী এক আকর্ষণ খুঁজে পেয়ে পড়তে শুরু করি। গুরুভার বিষয়ে নদীজল-তরতর ভাষার নিপুণ ব্যবহারই যে আমাকে দিয়ে বইটি শেষ অবধি পড়িয়ে নিয়েছিল তা নিশ্চিত একেবারে। এরপর সেই…

  • ইহজাগতিকতার অনন্য অভিযাত্রী আনিসুজ্জামান

    ইহজাগতিকতার অনন্য অভিযাত্রী আনিসুজ্জামান

    জনক-জননীর প্রতি অসীম শ্রদ্ধাবোধ শিক্ষা-সংস্কৃতির অকৃত্রিম সচেতনতা, ইহজাগতিকতার অনমনীয় অভিযাত্রী হিসেবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের নতুন করে পরিচয় দানের অপেক্ষা রাখে না। কেবল সম্মোহিত চিত্তে ফিরে দেখার তাগিদেই এই অকিঞ্চিৎ আয়োজন। বাইরে করোনা-আক্রান্ত দুর্যোগের পৃথিবী আর ভেতরে আমাদের মতো স্ববিরোধীদের মাঝে সাংস্কৃতিক ভুবনে অভিভাবকহীনভাবে দেশবাসীকে রেখে চলে গেলেন তিনি। আমরা বিমূঢ়চিত্তে দূর থেকে চেয়ে দেখলাম। সুধাকর (১৮৮৯)…

  • আনিসুজ্জামান স্যার ও আনুষঙ্গিক

    আনিসুজ্জামান স্যার ও আনুষঙ্গিক

    আমাদের পথচলা এক সময় থেমে যায়, জীবন থামে না।’ – আনিসুজ্জামান (বিপুলা পৃথিবীর শেষ বাক্য) অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭। তাঁর পুরো নাম আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান। পুরো নামটি অনেক কাছের মানুষেরও খুব একটা জানা নেই। বিস্মৃতপ্রায়। আনিসুজ্জামানের পিতা এ. টি. এম মোয়াজ্জম ছিলেন একজন সুখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। তাঁর…

  • স্বরূপসন্ধানী আনিসুজ্জামান

    স্বরূপসন্ধানী আনিসুজ্জামান

    অভিভাবকতুল্য ড. আনিসুজ্জামানকে হারিয়ে এক শূন্যতা প্রতিনিয়ত যেভাবে আমাদের গ্রাস করছে তা সহজে দূর হবার নয়। আমরা সকলে জানি, ভাষা-আন্দোলনের সময় যখন তাঁর বয়স মাত্র পনেরো বছর, তখন থেকেই তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ এক মানুষ। আমৃত্যু তাঁর জীবনসাধনা, বাঙালিত্বের চর্চা ও জাতীয় সংকটকালে ওঁর ভূমিকা বাঙালি সমাজকে উদ্বুদ্ধ করেছে একটি উদার, সহিষ্ণু, বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে…

  • একজন আনিসুজ্জামান!

    একজন আনিসুজ্জামান!

    আমি কোথায় পাব তাঁরে? আমার বাবা অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর তো বটেই, জীবদ্দশাতেই আমার তাঁকে ঘিরে সবসময় এই প্রশ্নটা মনে হতো বারবার। বাবা আনিসুজ্জামানকে আমি এবং আমার বোনেরা সারাজীবন খুঁজেই বেড়িয়েছি, কিন্তু তাঁকে আমাদের করে আমরা কখনোই পাইনি; পেয়েছি অনেক মানুষের ভিড়ে, কখনো মঞ্চে, কখনো আন্দোলনে। তাঁকে জেনেছি তাঁর লেখা পড়ে অথবা অন্যের সম্ভাষণে। তাই…

  • অজস্রতায় তিনি

    অজস্রতায় তিনি

    কালি ও কলমের স্মারক সংখ্যার আয়োজন হলেই একটা চাপা ব্যথা অনুভব করি। এই কর্মতৎপরতার মধ্য দিয়ে যেন বিষাদভরে নিশ্চিত হই কোনো বিশেষ ব্যক্তির প্রস্থান সম্বন্ধে। আরেকটা নক্ষত্র খসে পড়ল, আলো একটু কমে গেল। সামনের সারির সাহিত্য-পত্রিকার কাছে এরকম একটি সংখ্যা সকলেই প্রত্যাশা করেন। এটাই তো কাজ। তাই কবি শামসুর রাহমান থেকে শুরু করে রবিউল হুসাইন…

  • বাংলা ভাষার বৈশ্বিক রূপ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি

    বাংলা ভাষার বৈশ্বিক রূপ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি

    এক মাস হয়ে গেল পিতৃসমতুল্য একজন অভিভাবকের প্রস্থান হলো। জাতি হারাল একজন শিক্ষাবিদকে, যিনি ছিলেন আপাদমস্তক একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। ১৪ মে ৮৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান প্রাণত্যাগ করেন। মৃত্যুর পর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয় সিএমএইচে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর…

  • অখণ্ড বাংলার চারণিক – আনিসুজ্জামান

    অখণ্ড বাংলার চারণিক – আনিসুজ্জামান

    কথাটা নতুন নয়। সকলেই জানেন। তবু এই মরণোত্তর রচনার ভিত গড়ার খাতিরে এ-কথা আরেকবার বলা থাকুক যে বাংলায় আত্মজীবনী লেখার চল বেশিদিনের নয়। সাহেবি আমলেই এতে আমাদের হাতেখড়ি। খ্রিষ্টীয় উনিশ শতকের মাঝামাঝি। পাকা হাতের দু-চারটে লেখা বেরোতে না বেরোতেই ভিক্টোরিয়ান মর‌্যালিটি আর ব্রাহ্ম ন্যায়নীতিবোধ তাকে এমনভাবে পেড়ে ফেলেছিল যে হাত খুলে লেখার রেওয়াজ কোনোদিনই গড়ে…

  • আনিসুজ্জামান : পরিমিতির প্রতীক

    আনিসুজ্জামান : পরিমিতির প্রতীক

    তখনো পর্যন্ত সামনাসামনি দেখা হয়নি, শুধু তাঁর স্বরূপের সন্ধানে পড়েছি। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে সাহিত্যের স্নাতক শ্রেণির পাঠ্যে কাজে লাগাই আনিসুজ্জামান-রচিত গ্রন্থটি। চর্যাপদ, মধ্যযুগ, বাঙালি মুসলমান লেখকদের তথা বাংলাদেশের সৃজনশীল-মননশীল সাহিত্য ও সমাজের বিশ্লেষণে তাঁর লেখা গ্রন্থর্ভূত চারখানা প্রবন্ধ সত্যিকার অর্থেই ছিল দিকনির্দেশনামূলক। সেই বিখ্যাত লেখক টানা করিডোর ধরে হেঁটে যান ধ্যানী-মৌন এক ভঙ্গিতে আর আমরা…

  • আরো এক সূর্যময় মান : আনিসুজ্জামান

    আরো এক সূর্যময় মান : আনিসুজ্জামান

    সে আমি আমার সামনে যেই চিত্র মেলি, তিনি তার রূপ শুদ্ধ করেন – আমি যে আমার মাটি যেই কর্মে ধরি, তিনি তার ঘ্রাণ মুগ্ধ করেন – বৃত্তের কেন্দ্রে তিনি অবলম্বনের অনিবার্য শ্বাস হয়ে থাকেন। জনপথে, গণযাত্রায়, কল্যাণের নিত্য সুতোয় বাঁধেন সময়ের সম্মিলিত আখ্যান। আলো ও মুক্তি যেন পরস্পর ভালোবাসা দিয়ে, বোধ দিয়ে, দায় দিয়ে নির্ণয়…

  • রবীন্দ্রনাথ : আনিসুজ্জামানের চোখে

    রবীন্দ্রনাথ : আনিসুজ্জামানের চোখে

    ১৮৮৬ সালে মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কড়ি ও কোমল কাব্যগ্রন্থের ‘প্রাণ’ কবিতায় লিখেছিলেন – মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। সুন্দর পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার এই প্রার্থনা ও প্রবর্তনাকে নিজের জীবনে পূর্ণমাত্রায় আত্মস্থ ও অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি; উত্তরসূরি আনিসুজ্জামানেও সুলক্ষ তারই অবিকল অনুরণন, তাঁর জীবনকৃতি প্রবল প্রতাপে…