2024

  • মানুষ

    মানুষকে আমি এতদিন কবিতা ভেবেছি তোকেও মানুষকে আমি এখন আর কবিতা ভাবতে পারি না তোকেও মানুষ আমার কাছে এখন শুধুই পদ্য ছন্দময় চরণের সাজানো সংসার

  • এসো হে বৈশাখ

    এসো হে বৈশাখ এসো এসো চৈত্রের দাবানল ঝেঁটিয়ে স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়ে গাঁয়ের ছেলের পাতার বাঁশি বাজিয়ে এসো তুমি বাংলার মাঠে ঘাটে প্রান্তরে স্বপ্ন ছড়িয়ে দাও চূর্ণ করে, দাও ছিন্নভিন্ন করে মনুষ্যত্বহীনতার বিকার বাংলাদেশের মাটিতে কেবলই হোক আবাদ মানবিকতার ফুল পাখি নক্শিকাঁথায় বন-জঙ্গলের কাব্যগাথায় বৈশাখের দুরন্ত সাহসের হোক জয়ধ্বনি মুছে যাক হাজারো না-পাওয়ার গ্লানি নতুন বছরের…

  • বিষাদে লুবাকে

    চাঁদ নেমে এসেছিল সেই রাতে সেবিকার পবিত্র অ্যাপ্রনে উন্নত পাহাড়চূড়া আলোর আভাসে স্নিগ্ধ ইশারায় ডাকে বিভাজিকা শান্ত স্নেহে সংকেত পাঠিয়েছিল আচ্ছন্ন আমাকে বাহুতে চাঁদের ছায়া, শিহরণে কেঁপে উঠি শরীরে ও মনে প্রথম বিদেশে যাওয়া, যৌবন প্রবেশদ্বারে সবে নাড়ে কড়া ভাষা তো অজানা ছিল, কথা নয়, শুধু জানা নাম তার লুবা লুবভের অপভ্রংশ, জেনেছি অনেক পরে,…

  • ষড়যন্ত্র

    ষড়য‌ন্ত্রের ডালপালা গ‌জি‌য়ে‌ছে পঙ্গপা‌লের মতো। প্র‌তি‌হিংসার আগু‌ন জ্বল‌ছে শত্রুর চোখে। যে‌দি‌কে তাকাই ফাল্গু‌নের ধু‌লোভ‌র্তি মুখ, ঘুমন্ত দে‌হের ওপর স্মৃ‌তির নির্জনতা। মায়া কই? এতো বহু‌বিধ শ‌র্তের জাল আর চাঁ‌দের জি‌কির! সেইসব নাদা‌নেরা ভুল নামতার ঘো‌রে জেঁকে ব‌সে‌ছে ঝরা পাতার মর্মর হ‌য়ে! যা‌রা মেরুদণ্ড বাঁকা ক‌রে লোভনীয় অপরূপ হ‌তে চায় তা‌দের গঠনতত্ত্ব নি‌য়ে গ‌বেষণা ক‌রে কী ফল…

  • সাইবার-হালিক, উড়ে আসে অঋবের কাছ থেকে

    ‘অতীত বলে কিছু নাই’ – এই কথা, বলছে সুরে সুরে কাউন ক্ষেতের পাশে দণ্ডায়মান দেবফল গাছের বাবুইপাখি ঠিক পাশেই বসে আছে একটা দোয়েল – জাতীয় ভঙ্গিমায়! সন্ধ্যার পূর্বে পাখি-গোত্র আশ্রয়ের খোঁজে ভুলে যায় ভেদাভেদ নীড়ের সন্ধানে ছোটে অতীতের বুকে, যদিও ভিন্ন কথা বলছে বাবুই, আজ, এই মাঠের ধারের ডালে বসে অতীত নিজের জন্য রচিত হয়…

  • আড়ালের গল্প

    ভেসে যায় সাদা মেঘ       ছেঁড়া ছেঁড়া স্মৃতি সন্ধ্যার আকাশে ওড়ে      কবিতা-উদ্ধৃতি বন্ধনের রজ্জুরাশি           যদি যায় ছিঁড়ে পথহারা পাখিমন           নীড়ে আর ফিরে? শরতের কাশফুল           মৃত্যুলেখা আঁকে নদীর উজানে চোখ         শেয়ালেরা হাঁকে! ঝিরিঝিরি ওঠে ঢেউ        চাঁদের আলোয় মন যদি তরি বায়          ভালোয় ভালোয় গুণ টানে স্মৃতিরাশি        পেছনের দিকে যতই এগোতে চাই        পথ ভারি ফিকে আড়ালের গল্প যদি        …

  • জীবনের কবিতা

    যারা হাসিখুশি ছবি দিয়ে বলছিল – ‘বেশ ভালো আছি’ আদপে তারা যে ভালো নেই, সময় খেলছে কানামাছি। চন্দনে আছে সুগন্ধ ঘটা করে সে তা জানায় কি! নদী যে ভরাট তার আভাস পাবো না কানায় কানায় কি? অধুনা চেকনচাকন ত্বক। ভিতরে থাকুক পোকার ঘর লাল টকটকে ঠোঁট দুটো ঢেকে রাখে সব ক্ষিপ্ত স্বর। কিছু নেই আর…

  • স্বরলিপি বৃষ্টির

    বৃষ্টির আনন্দে মাছটির মৃত চোখ নড়েচড়ে ওঠে আকাশের মগডালে ঝুলে সুবর্ণ সকাল দেবতা সূর্য পকেটের লুকানো খুচরো পয়সা ভিখিরি থালায় বেদনা অমূল্য রতন আকাশ মেঘের মনের ঘর বসতি স্বরলিপি বৃষ্টির সুর তরঙ্গে যৌবনবতী বালিকা শরীর; খুঁজি সুখ বৃষ্টি সঙ্গমে তিলোত্তমা লোহিত আগুন নৌকার গলুই গুরুগম্ভীর ভেসে যায় জলে পাটাতন

  • আকাশ এতো দূরে ছিল না

    আকাশ কখনো এতো দূরে ছিল না। মক্তবে যাওয়ার আগে পুকুরের জলে হাত ছোঁয়ালে উঠে আসতো শীতল আকাশ। স্কুল থেকে ফিরে খেলার মাঠে যেতে যেতে দেখতাম,  গৌরীদি-র শাড়ির আঁচলের মতো, আড়ালি বিলের বামন পুকুরপাড়ে দেশি কমলা রংমাখা আকাশের এক প্রান্ত পাহারা দিয়ে রাখতো আমাদের মাঠ। এভাবে চলতে চলতে একদিন তুমি এলে, হাত ধরলে, আকাশ আরো কাছে…

  • নিশিঘুম

    পেছন-যাত্রায় তুমি কত দূর যাও যাও নাকি বসে থাকো একা মহাকাল ঘুমের চুমের ভেতর স্বপ্ন নাকাল বেহুঁশ আর বেকারার যাত্রী, কোথা যাও? যেখানে ঘুমের দেশ ডানা মেলে ওড়ে যেখানে ফেলে এসেছো কুড়ানো পাথর নিপুণ নিশীথ যদি জমানো আকর তবে কেন ছুটছো মিছে, হায় ভবঘুরে!

  • দেবী

    দেবী, চোখ মেলে দেখো, দেখো তোমার মন্দিরে কে! আমি, তোমার চণ্ডাল প্রেমিক। জানো তো ওই নেড়ি কুকুরের দল আমাকে স্পর্শ করতে দেয় না তোমায় তাই আজ গোপনে এসেছি, জানি তুমি ওদের পূজায় তুষ্ট নও তুমি তো প্রেম চাও – আকণ্ঠ নিমজ্জিত প্রেম, মুখস্থ কথায় মানুষই ভোলে না – আর তুমি তো দেবী। ওরা তোমাকে শুধু…

  • রোদ্দুর

    পথ ভুলে যদি চলে আসো কোনোদিন ফেরাবো না, কখনো না! মনে করো ফেলে আসা আলো-আঁধার অবহেলা, অবিস্মরণীয় ভুল দেয়ালের এককোণে লেগে থাকা হিরণ¥য় ঝুলকালি, আবেশরঙা দুঃখ, পরিযায়ী পাখির মতো স্মৃতি – কী যেন কী যেন ধুৎ বলতেই পারো  : চলনসই জীবন ভাবতেই পারো : মিলনায়তন যায় আসে না। গমনে সামান্য লেগে আছে লবণ ও সামাজিক…