তমিজ উদ্দীন লোদী
আমরা যখন ট্রেন থেকে নামলাম, তখন সুনসান স্টেশন, স্তব্ধতা গড়িয়ে নামছে চারপাশে। অলৌকিক সান্ধ্যছটায় ভেসে যাওয়া প্রকৃতির অবয়ব। তার পাশে বসে আছে ধ্যানস্থ মেয়েটি। পাশ ফেরা কিয়দংশ মুখ। যেন পিকাসোর আঁকা কিউবিক ছবি।
মুহূর্তে মনে হলো স্তব্ধতারও মানে আছে। অন্যরকম মানে। মায়াবী, ধ্যানস্থ, রহস্যের বাতাবরণে স্থিত। ফসফরাসের আলোর মতো কিংবা ক্ষীণতোয়া স্রোতস্বিনীর মতো মৃদু। যেন আড়ালে নিবিড় হয়ে আছে অন্ধকারাচ্ছন্ন এক নারী।
গাঢ় রঙের বিন্যাসের মতো আলো শুষে নেয়া সন্ধ্যার ব্লটিংপেপার শুষে নেয় নড়বড়ে পথচিহ্ন আর ভ্রান্তিবিলাস। যেন স্ফটিকশুভ্র ভাস্কর্যের গায়ে পরানো হয়েছে কালো আলখাল্লার ফাঁস। ঘূর্ণিজলের মতো ঘন নির্জনতা ও বিষাদ।
তবু বৃষ্টি নামে। প্লাটফরম রেলপাত ধুয়ে যায়। বৃষ্টিস্নাত কদমের মতো প্রস্ফুটিত হয়ে থাকে সন্ধ্যার আকাশ। ধুয়ে যায় ধ্যানস্থ মেয়েটি। পাশ ফেরা কিয়দংশ মুখ ভেসে যায়। নাকি কোনো নারী কি মেয়ে আদৌ ছিল না সেখানে। নাকি সবই অলীক ছিল। ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে, মৌনতায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.