ইশতাহার : নতুন প্রেমের

১.

বলেছি এসো না; শোনো, এতো কম শীতে

ততোখানি জমবে না প্রেম;

যদি না কঠোর হিমে হৃদয়ের ত্রসরেণু

বরফে কঠিন হয়ে ওঠে।

তাহলে অপেক্ষা করি চলো

পথ ক্রমে ঢেকে যাক অবিরাম তুষারে তুষারে।

যাতে, অবাধে চালাতে পারি স্লেজ

আজো যদি প্রেম কিছু বেঁচে থাকে, অবশিষ্ট থাকে

নিজেদের ঘাড় মটকে, হৃৎপিণ্ড খুবলে খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে

যতোবার দেখা হবে ড্রাকুলার মতো ততোবার

একে অপরের শিরা ফোলা ঘাড়ে

বক্র-সূচালো দাঁত গেঁথে

রক্ত পান করে যাবো লাল সুরা ভেবে

আমরা বাদুড় হবো পৃথিবীর আকাশে-আকাশে

উড়ে যাবো সবদিকে। কার্পেথিয়া থেকে বহুদূর

আমরা করবো স্তব কুয়াশায় ঢাকা এক ঠান্ডা-হিম শাদা

                                                কফিনের;

কপিশ ডানার নিচে আবছায়া এক বেদিমূলে

রক্ত ঢেলে বলকে বলকে

আমরা করবো প্রেম

প্রণয়ের নব সংবিধানে

যদিবা এমন হয় কতো ভালো হবে :

আমরা জাগবো ফের

আপন বিনাশে আর

অপরের করাল বিনাশে

তোমার মসৃণ ত্বক কুঁচকে যাবে শীতে;

তোমার গানের গলা ভরে উঠবে

কফে আর ঘুংড়ি কাশিতে

আর আমি? বেঁকেচুরে যাব আর

পথ চলবো হামাগুড়ি দিয়ে;

প্রণয়ের শব কাঁধে নদীতীরে বয়ে নিয়ে যাবো

তর্জনী উঁচিয়ে বলি, ঝেড়ে-কেশে বলি :

তুমি কোন অধিকারে চিরকাল কোমল মসৃণ?

দিলখোশ ডাইনি তুমি। আর আমি পিপাসার্ত প্রেত;

শকুনির মতো কোনো অনিবার্য ছলনার ছকে

প্রেমের কঙ্কাল নিয়ে আজ তবে পাশা খেলা হবে

হয়ো না বিব্রত, অহো, দোঁহে মিলে চলো

হেমবর্ণ ভোরগুলি ভরে দিই

কয়লা-কালো মেঘের বারুদে;

তারপর শিরা কেটে রক্ত দেবো ঢেলে

৮.

প্রণয়ের ইশতাহার লাল মেঘে

বিলি করবো আমরা দুজনে – যাতে

মাতৃক্রোড়ে ভয় পেয়ে শিশু কেঁদে ওঠে

ইক্ষুরস, দারু, তামরস … এসবের চেয়ে

শ্রেয়তর আমাদের চুম্বনের গাঢ় লাল মদ

১০ 

আমরা আনবো, অহো, ধাত্রী সেজে

ঘরে ঘরে গন্নাকাটা, মৃত শিশু

শীতের কুহর থেকে টেনে

১১

তারপর আকাশের সবচেয়ে উঁচু ডালে বসে

উৎকর্ণ হয়ে শুনবো সমুদ্রের পাগল দামামা

১২

আর কেউ নয়, শুধু আমরা দুজনে

অক্ষরের দশাঙুলে ছুঁয়ে দেখবো

বরফের মৃদু লালকাশি

১৩

চলো তবে প্রণয়ের নব সংবিধানে প্রতিটি সমুদ্রতীরে প্রত্যহের দুর্গ জয় করি