মানুষ হেঁটে যাচ্ছে চুকনগরের দিকে শতকে শতক হাজারে হাজার
তারা ডুমুরিয়া, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, বাগেরহাট, রামপাল, মোল্লাহাট,
মোড়লগঞ্জ, শরণখোলা, কচুয়া, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জের মানুষ।
দাউ দাউ করে জ¦লছে সব বসতভিটা, স্বজনহারা মানুষ ঘন হয়ে ওঠে
তারা সরসকাটী, কলারোয়া, ঝাউডাঙ্গার মাঝ দিয়ে বর্ডার পাড়ি দেবে।
কেউ-বা ভদ্রা, ঘ্যাংরাইল, তেলিগাতি, শোলমারী পার হয়ে চুকনগরে আসছে
করোটির ভিতরে চিন্তা চুকনগর পৌঁছালে একটু বিশ্রাম, কেনাকাটা, রান্নাবান্না
তারপর আবার হাঁটা, অঘোষিত ঘোষণা মনে সবাই ছুঁতে চায় সীমানা পিলার।
২০ মে ভোর বেলা লাখো লোকের ভাসান স্কুলমাঠে, বাগানে, বাজারে সবখানে
তখন ঘড়িতে সকাল এগারোটা সাতক্ষীরা রোড দিয়ে দুই গাড়ি পাক সেনা ঢোকে
পাটের জমিতে কৃষকেরা নিড়ানিতে ব্যস্ত, পাতাবাহার পোশাক দেখে উঠে দাঁড়ায়
হাতে তাদের কাস্তে, মাথায় গামছা, চিকন মোড়ল শহিদ হলো গুলিতে বুক ঝাঁঝরা।
নিরীহ মানুষ জীবন বাঁচাতে আর্তচিৎকার করে দৌড়াতে থাকে এদিক-ওদিক
রাইফেল, স্টেনগান, মেশিনগান, ট্যাংক থেকে গোলা ছোটে মানুষের দিকে।
তামাম দুনিয়া বোবা হয়ে যায়, হঠাৎ লাশের স্তূপ থেকে কেঁদে ওঠে দেবশিশু
সে মৃত মায়ের দুগ্ধ পান করে; তাকে বুকে তুলে নেয় এরশাদ আলী মোড়ল।
চুকনগর পরিণত হয় মহাশ্মশানে; ভদ্রার জল সেদিন মানুষের রক্তে লাল হয়ে যায়
ছয় ঘণ্টা পর যখন গুলি থেমে যায় তখন ঘড়িতে বিকেল চারটা চুকনগর বধ্যভূমি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.