গোলাম মোরশেদ খান
-
আইনস্টাইন ও বোরের উত্তরাধিকার আমরা কি কখনো বুঝতে পারব যে কোয়ান্টাম তত্ত্ব কী বোঝায়?
আলবার্ট আইনস্টাইন ও নিলস বোর, বিশ শতকের পদার্থবিদ্যার এই দুই দিকপাল প্রায় সারাজীবন ধরে সম্পূর্ণ বিপরীত দুই বিশ্বদৃষ্টি পোষণ করে গেছেন। প্রথমজনের কাছে জগৎ ছিল চূড়ান্ত বিচারে যৌক্তিক, যেখানে সবকিছুরই যথার্থ একটি অর্থ রয়েছে। আমাদের প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে প্রাপ্ত বাস্তবতার গভীর অভ্যন্তরে কার্যকারণ সম্পর্কের যৌক্তিক শৃঙ্খল দিয়ে এটি পরিমাপযোগ্য ও প্রকাশযোগ্য। কিন্তু দ্বিতীয়জনের মতে, এরকম…
-
অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন : কেন কিছুই না থেকে কিছু রয়েছে?
বিশাল এই মহাবিশ্বে আমাদের এখন পর্যন্ত জানামতে মানুষ হচ্ছে একমাত্র প্রজ্ঞাবান প্রাণী। জগৎ সম্পর্কে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে শিশুরা যেমন তাদের পিতা-মাতার কাছে কিছু সরল প্রশ্ন উত্থাপন করে, তেমনি আমাদের দার্শনিক-বৈজ্ঞানিকরাও সেরকম কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন – আমরা কারা? আমরা কোথায় আছি? আমরা কি একা? কেন আমরা এখানে? আমাদের ভবিষ্যৎ কী? অস্তিত্ব কাঁপানো এ-প্রশ্নগুলো আমাদের স্নায়ুতে…
-
পারভেজ হুদভয়
প্রগতিশীল, উদারপন্থি ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার অধিকারী পাকিস্তানি পদার্থবিদ পারভেজ আমিরালি হুদভয়কে প্রখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী দি নিউ সায়েন্টিস্ট আখ্যায়িত করেছে The Voice of Reason in Pakistan – এই নামে। তিনি তাঁর নিজ দেশ পাকিস্তানের পশ্চাৎপদ সমাজে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বাক স্বাধীনতা, ধর্মীয় উগ্রবাদ, বিজ্ঞানের ইসলামীকরণ, পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন, সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে…
-
রিচার্ড ডাউকিন্স : জিন ও মিমসের গল্পকথক
ব্রিটেনের রয়াল সোসাইটি সায়েন্স বুক প্রাইজের ৩০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। তারা পাঠকের ভোটে নির্বাচিত করেছে ‘সর্বকালের শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বিজ্ঞান গ্রন্থ’ – আর ডারউইনের অরিজিন অফ স্পিসিস কিংবা নিউটনের প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমাটিকার মতো যুগান্তকারী বইগুলিকে হারিয়ে এ-অভিধাটি জয় করে নিয়েছে একজন স্বল্পপরিচিত জীববিজ্ঞানী ও সমাজচিন্তক রিচার্ড ডাউকিন্সের লেখা বই দ্য সেলফিশ জিন। এ-তালিকায়…
-
শতবর্ষে ট্রাকটেটাস এবং ল্যুডভিগ ভিটগেনস্টাইনের একটি চমৎকার জীবন
তীক্ষè ঈগলচঞ্চু নাসা, অল্পবয়সী ছোটখাটো একজন মানুষ যুদ্ধে যাচ্ছেন। তিনি সংস্কৃতিমনা অপরিমেয় ঐশ^র্যের অধিকারী একটি অস্ট্রিয়ান পরিবারের সন্তান। তিনি কথা বলেন ভিয়েনা সার্কেলের দার্শনিকদের মতো করে উচ্চস্বরে, যদিও বার্ট্রান্ড রাসেলের মতো খ্যাতনামা দার্শনিকের সঙ্গে তর্ক করার মতো ইংরেজিটাও তাঁর আয়ত্তে। এ-কারণেই তিনি আশা করেন যে, রাসেল তাঁকে দর্শনের জগতে পা রাখার জন্য জায়গা করে দেবেন।…
-
বিজ্ঞান ও দর্শনের দ্বন্দ্ব
এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, বিজ্ঞান তার মাতৃরূপী দর্শনের থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। প্রাথমিক যুগের দার্শনিকদের অন্তর্জ্ঞান বিজ্ঞানীদের মনোজগৎকে আলোকিত করেছে। আবার একই সঙ্গে বিজ্ঞানের ওপর দর্শন অনেক সময় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ারও জন্ম দিয়েছে, যখন প্রথাগত জ্ঞানের বাইরে নতুন চিন্তার কোনো অভিযাত্রায় তা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজেই একটি নিঃসন্দেহে বলা যায়…
-
যন্ত্র ও তার মন
সম্ভবত আমাদের মন হচ্ছে স্নায়ুতন্ত্রের ভৌতসত্তার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা একটি বিমূর্ত ও জটিল বিন্যাস। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে একই জিনিস কি স্নায়ুতন্ত্র ছাড়া অন্যান্য ভৌত বস্তুর মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব? সেটি হতে পারে একটি পিঁপড়ের কলোনি, যেখানে সবাই মিলে কাজ করে একটি সামগ্রিক সত্তা হিসেবে; অথবা অর্ধপরিবাহী ট্রানজিস্টরের একটি নেটওয়ার্ক, যা একসঙ্গে মিলে…
-
পেছন ফিরে দেখা বিশ শতকের বিজ্ঞান
সাদা তার একটি বড়েকে সি-৪ অবস্থানে নিয়ে চাল দিলো। এর জবাবে কিছুক্ষণ ভেবে কালো তার দু-হাত ওপরে তুলে পরাজয় মেনে নিল। এই সংক্ষিপ্ত মুহূর্তটির মাধ্যমে ঘটল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা – একটি যুগের ইতি এবং নতুন আরেকটি যুগসূচনার ক্রান্তিকাল – এ মুহূর্তটি থেকে মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে গেছে কৃত্রিম প্রজ্ঞার বুদ্ধিমত্তা। মানুষ হেরে গেছে তারই তৈরি যন্ত্রের…