শ্রদ্ধান্জলি

  • চুল্লির আগুন নিভে গেলে ফিরে আসুন

    চুল্লির আগুন নিভে গেলে ফিরে আসুন

    অমর মিত্র ১৯৩৯-এর ৫ মার্চে দূরউত্তর বিহারের ভাগলপুরে দিব্যেন্দু পালিতের জন্ম। ৭৯ সম্পূর্ণ করে ৮০-তে পা দিতেন দুমাস বাদে। চলে গেলেন। ভাগলপুর বহু কৃতি ও শ্রেষ্ঠ মানুষের জন্ম দিয়েছে একসময়। উত্তর বিহারের পূর্ণিয়া, ভাগলপুর এবং দ্বারভাঙা ছিল কৃতি বাঙালির উপনিবেশ। তপন সিংহ, সুমিত্রা দেবী, ছায়া দেবী, কিশোরকুমারদের বিখ্যাত গাঙুলি পরিবার ভাগলপুরের। আর গিয়েছেনই বা কতজন।…

  • মৃণাল সেন : অন্ধকারের  আরেক কণ্ঠ

    মৃণাল সেন : অন্ধকারের আরেক কণ্ঠ

    নূরুজ্জামান কায়সার সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন – এই তিন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র নির্মাণকারী ভারতীয় চলচ্চিত্রকে দেশে ও বিদেশে যেভাবে প্রসারিত করেছেন, অনেক আধুনিক চলচ্চিত্রকার সেটি পারেননি। তাঁরা তিনজনই ছিলেন খুব কাছাকাছি সময়ের। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক গত হয়েছেন আগেই। তিন টলস্টয়ের শেষ নায়ক মৃণাল সেনও চলে গেলেন ২০১৮ সালের শেষ দিনে। তাঁর…

  • ক্যামেরার কবি আনোয়ার হোসেন

    ক্যামেরার কবি আনোয়ার হোসেন

    তাঁর মৃত্যুর খবরটা দিয়েছিলেন শর্টফিল্ম আন্দোলন ও শুদ্ধ চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ঢাকার সমত্মান হাশেম সুফীভাই। মৃত্যুর পরপর সুফীভাই তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস না দিলে আমরা অনেকেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুসংবাদ জানতে পারতাম না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শরীয়তপুর এবং ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মাঝখানে কিছুদিন ফ্রান্সে তাঁর ফরাসি স্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। কিছুদিন পর এক সমত্মানকে নিয়ে…

  • আনোয়ার হোসেনের চিত্রধারণরীতি প্রসঙ্গে

    আনোয়ার হোসেনের চিত্রধারণরীতি প্রসঙ্গে

    কে বানাল এমন রংমহলখানা বাউলতত্ত্বে মানবশরীরকে নৌকা, অধরচাঁদ, রংমহল ইত্যাদি অভিধায় রূপকার্থে চিহ্নিত করা হয়। মানবকে যিনিই বানাক,  জগৎ-সংসারে প্রাত্যহিক নানা কাজের জন্য মানব নিজেকে নিজেই উপযুক্ত করে তৈরি করেন তথা বানান। আনোয়ার হোসেনও (৬ অক্টোবর ১৯৪৮-১ ডিসেম্বর ২০১৮) তাঁর মর্জিমাফিক কাজের জন্য নিজেকে নিজেই বানিয়ে নিয়েছিলেন। নিজেকে শুধু চিত্রধারক বানাননি, মেধাবী ছাত্র, চলচ্চিত্রবিদ্যার শিক্ষক,…

  • শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে স্মৃতির শৈল্পিক তর্পণে

    শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে স্মৃতির শৈল্পিক তর্পণে

    গলার স্বর গাঢ়। শুনেই বোঝা যায় কোথাও একটা প্রত্যয় আছে, মুখের অভিব্যক্তিতেও তা প্রকাশ পেল। বললেন তিনি, নিজে কোনো ক্লাস নেবেন না। তবে যাঁরা ক্লাস নেবেন তাঁরা, তাঁর চেয়ে অনেক বেশি গুণী। নাম শুনেই মন ভরে গেল। সৈয়দ আলী আহসান, মুস্তাফা মনোয়ার, আমিনুল ইসলাম আর সাঈদ আহমেদ, এই বলে তিনি বেরিয়ে গেলেন। তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে…

  • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : ‘ভেসে আসছে সূর্যোদয়ের গান’

    নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : ‘ভেসে আসছে সূর্যোদয়ের গান’

    সৃষ্টিশীল মানুষমাত্রই শুভ্র-সুন্দর-আলোকিত আগামীর স্বপ্ন দেখেন এবং সে-স্বপ্নকে সবার চোখে মেলে ধরার নানা আয়োজনে বিচিত্র উপায়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। আলোর গতিবিধি বুঝে নেওয়ার জন্য অন্ধকারকেও তাঁকে নিবিড়ভাবে পাঠ করতে হয়, বুঝে নিতে হয় দৃশ্য ও অদৃশ্যের ভেতর-বাহির, খুঁজে নিতে হয় যাপিত ও প্রত্যাশিত জীবনের নাড়িনক্ষত্র। এই বোঝাপড়ার সঙ্গে স্রষ্টার নিবেদন আন্তরিক হলেই তাঁর সৃষ্টির সমুদ্রে…

  • স্মরণের আবরণে  নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

    স্মরণের আবরণে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

    ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন আর ছুটির দিন হলেও অফিসে আসতে হয়েছিল কাজের চাপের জন্য। অসংখ্য ফাইলপত্রের মধ্যে ডুবে আছি। অনুজপ্রতিম পিয়াস মজিদ ফোন করে খবরটা জানালো – কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মারা গেছেন। মুহূর্তে আমার সামনের সত্মূপাকার নথিপত্র যেন চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে গেল। মন চলে গেল ১৯৭১ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি কোনো একটি দিনে। আমার…

  • সেতুপুরুষের মৃত্যু  

    সেতুপুরুষের মৃত্যু  

    কী দেখলে তুমি রৌদ্রকঠিন হাওয়ার অট্টহাসি দুহাতে ছড়িয়ে দিয়ে নিষ্ঠুর মৃত্যুর প্রেতসেনা মাঠে মাঠে বুঝি ফিরছে? ফিরুক, তবু তার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়ার লাবণ্য তুমি একবারও দেখলে না?   এক লহমায় ঠাহর করা যায় উত্তরগর্ভ এই প্রশ্নের প্রণেতা নীরেন্দ্রনাথ এক সপ্রতিভ স্বরায়ণে আমাদের মেসমেরাইজ করে দিতে জানেন। সত্যের সৌজন্যে কবুল করতেই হয়, একই অনুষঙ্গে ‘কৃষ্ণচূড়া কৃষ্ণচূড়া এখনও…

  • অন্নপূর্ণা দেবী

    অন্নপূর্ণা দেবী

    দেবী অন্নপূর্ণার পূজার চতুর্থীতে চলে গেলেন অন্নপূর্ণা দেবী। অন্নপূর্ণা শঙ্কর। একানববই বছর বয়সে চলে গেলেন বটে, তবে এ-যাওয়া দেবী অন্নপূর্ণার মতোই ফিরে ফিরে আসার জন্য যাওয়া। যে-অমরত্ব ভারতীয় রাগসংগীতকে ছেয়ে আছে, সেই অমরত্বেই দীর্ঘদিন বসবাস এই দেবীর। বাবা উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ও মদিনা বিবির সমত্মান অন্নপূর্ণার জন্মকালে নাম হয়েছিল রোশেনারা। জন্ম ১৯২৭-এর ১৬ এপ্রিল, যা…

  • আফসার আমেদ : অনেক কথা বলা হলো না

    আফসার আমেদ : অনেক কথা বলা হলো না

    ‘কবি ও লেখকরা তো সৌন্দর্যতত্ত্বের কাজ করেন, তাঁর স্বাধীনতা তিনি চান। তাঁরা সাধারণত মানুষকে মানুষ দেখতে ভালোবাসেন। সমাজ, রাষ্ট্রযন্ত্র হয়তো তাঁকে স্বাধীনতা দিতে পারে না। তখন লেখক-সাহিত্যিকরা জীবনদর্শন তৈরি করে নেন। সেই কাজে আপামর মানুষের হয়ে কথা বলবার জন্য সব শিল্পমাধ্যমে তাঁর প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকেন। সাহিত্যশিল্পের কাজ সমাজজীবনে অন্তঃসলিলা স্রোতের মতো তাঁর সৃষ্টিকে প্রবাহিত করা।…

  • রমাপদ চৌধুরীর প্রয়াণ

    রমাপদ চৌধুরীর প্রয়াণ

    গত ৩০ জুলাই কথাশিল্পী রমাপদ চৌধুরী ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন। ১৯২২-এ তাঁর জন্ম। গত শতকের চল্লিশের দশকে যে-লেখকরা লিখতে এসেছিলেন বাংলা সাহিত্যে, তাঁদের শেষ প্রতিনিধি ছিলেন রমাপদবাবু। দীর্ঘদিন লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন; এবং তা ঘোষণা করেই। সেও বছর বিশ-পঁচিশ হবে। রমাপদবাবু লিখতেন কম। আমি যখন তাঁকে দেখেছি, সেই ১৯৮৩-৮৪ সাল, বছর পঁয়ত্রিশ আগে, তখনই…

  • মনোরম মনোগাথায়  কবি বেলাল চৌধুরী

    মনোরম মনোগাথায় কবি বেলাল চৌধুরী

    বেলাল চৌধুরীর মতো এত উঁচুমাপের মানুষ সম্পর্কে কোনো কিছু বলতে বা লিখতে যাওয়া আমার মতো নগণ্য মানুষের নিছক ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয়, তথাপিও একটি আকুতি নিয়ে আমি দাঁড়াতে চাই। এ-কথা ঠিক যে, আমি বয়সে পরিণত তবে লেখালেখির জগতে নিতান্তই ‘অয়েলক্লথের’ ওপর গড়াগড়ি যাওয়া একটা শিশু। শিশুর দোলনার উপরিভাগে লাল-হলুদ রঙের দোলায়িত কাগজের ফুলটি দেখে…