October

  • নানা-নানি : প্রথম পর্ব

    নানা-নানি : প্রথম পর্ব

    জ্ঞান হওয়া থেকে নানিকে সবসময় পাশে পেয়েছি। নানা কলকাতায় এক ব্রিটিশ জাহাজ কোম্পানির ডাক্তারের সহকারী, অর্থাৎ কম্পাউন্ডার। কম্পাউন্ডারের কাজ হলো ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী শুকনো ওষুধ অনুপাতমতো মিশিয়ে মিক্সচার তৈরি করে দেওয়া। ওষুধের শিশি স্বচ্ছ বা পাটকিলে রঙের হতো। এই শিশির গায়ে কাঁচি দিয়ে নকশা করে কাগজ কেটে লেই দিয়ে সেঁটে দেওয়া। দিনে ক-দাগ খাবে তা…

  • সালমান রুশদির ‘মধ্যরাতের সন্তানেরা’ বুকারপ্রাপ্তির চার দশক

    সালমান রুশদির ‘মধ্যরাতের সন্তানেরা’ বুকারপ্রাপ্তির চার দশক

    সালমান রুশদির (১৯৪৭) বিখ্যাত উপন্যাস মিডনাইটস চিলড্রেন তথা ‘মধ্যরাতের সন্তানেরা’ প্রকাশের চল্লিশ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮১ সালে বিলেতে। সে-বছরই উপন্যাসটি ব্রিটেনের সাহিত্যাঙ্গনের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার বুকার লাভ করে; রুশদি পান তারকাখ্যাতি। ‘আমি নিদ্রা হতে উত্থিত হয়ে দেখলাম আমার নাম ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।’ রোমান্টিক যুগের ইংরেজি কবি বায়রনের (১৭৮৮-১৮২৪) মতো রুশদিও এমনটি বলতে পারতেন…

  • পদ্ম

    ডুবিল আসমানের তারা চান্দে না যায় দেখা। সোনালী চান্নির রহিত আবে পড়ল ঢাকা॥                       – মৈমনসিংহ গীতিকা সখী, সখী আমার মরিবে সে, মরিবে নিশ্চয় জানি; জানি না কোন ঘোরে যে উঠিল এমন তুমুল ঝড় চাঁদ-তারা ডুবিল ঘন মেঘের ভিতর, ভাঙিল ঘর আর ছাড়িল শখের সংসার সন্তান আর বন্ধু ছিল যত।                        এখন নিঃসঙ্গ পথে পথে…

  • গহনে যে আকাশ

    ঊরুর গহনে যে আকাশ ‘খ’-পুষ্প সেখানে ঝরে, চন্দ্র-সূর্য, আছে গ্রহতারা আলোময় জন্ম, মৃত্যু; বলো, গিরিমুখ খুলে গেলে                     কী আহুতি। পারে পারে ঘাট কত মায়াবন, মরা ইতিহাস সেতুর ওপরে ওই দাঁড়িয়ে পথিক। বলো হে অক্ষরমালা, আজন্ম ঝঞ্ঝাট; অকিঞ্চিৎ লাগে জীবনের বাড়ি ফেরা।

  • অশেষ উপসংহার

    ১ আমি কি এক অচেনা জলবায়ু? স্তম্ভিত ভাঙার অন্তঃপটরেখা। যদি তাই … আমি কি ছিলাম           তোমার নিদ্রাহীনতা? যে তোমাকে প্রত্নসত্য বলে দিত। ঋতু এলোমেলো, কখন হেমন্ত গেছে, বৃষ্টি অন্য চলনে এলো, শীতে অনেক শালিক মরে গেছে। যদি তাই … নীরবে বাড়াই হাত           কাদা থেকে তুলতে বেড়ালের শাবক। উড়ে যায় অন্ধকার ফুটিয়ে জীবন্ত জীবাশ্ম-স্মৃতি।…

  • বাবার দৃষ্টির মুগ্ধতা

     কিছুই লাগতো না জানি বাবার জমির একমুঠো কলই শাক ছাড়া   অথচ অসুরের মতো ছিঁড়ে আনলি ফসলসমেত গোটা মাঠখানি। কিছুই লাগতো না জানি বাবার গাছের একটি কচি ডাব ছাড়া অথচ দানবের মতো ঘাড়ে করে বয়ে আনলি আস্ত দিঘিটাই। কিছুই লাগতো না জানি বাবার ভিটের একমুঠো বাসক ফুল ছাড়া অথচ দৈত্যের মতো ছিঁড়ে আনলি গোলাপের পুরোটা সংসার।…

  • কিছু কথা

    একটা সুন্দর দৃশ্য শতধারায় মনে থাকে অনেক কাল। বহু অনুপম ঘটনা জীবনের শূন্যরেখা পর্যন্ত – যায়। কিছু কথা মন থেকে মোছে না কখনো। রক্তের প্রবাহে লেখা হয় চেতনার চিলেকোঠায় থেকে যায় কিছু সুবাস জাগানো কথা।  আদিগন্ত সবুজে ভরা দুই একটা হাসি কান্না। সাগরের ঢেউ হয়ে ঘুরে বেড়ায় স্রোতে স্রোতে দুই একটা চোখের চাওয়া। প্রেম-চোখ,  ভালোবাসা-চোখ…

  • সংক্রামক

    দৃশ্যত ভয়ানক একটা কিছু হয়ে যেতে যেতে এক হ্যাঁচকায় অন্ধকার খাঁড়ির গা থেকে পিছলে যাওয়া পা-টাকে নিরাপদ আশ্রয়ে তুলে আনলাম। আমারই বরাতজোরে এ-যাত্রায় বিবশ প্রাণটুকু রক্ষা পেল! নইলে নিশ্চিত মরণ থেকে স্বয়ং ঈশ^রও বাঁচাতে পারতো কি না সন্দেহ। কিন্তু জীবন এ-কোন মোহনবাঁশির সুরে ভোলায় আমাকে? পাহাড়ে ধস নামলে যেভাবে নিম্নগামী পাথর পতনোন্মুখ হয়ে পড়ে অথবা…

  • দম্পতি

    রাত বাড়ে কিন্তু ওরা ঘুমাতে যায় না রাত আরো বাড়ে ওরা হাঁটে এ-ঘর থেকে ও-ঘরে ও-ঘর থেকে বারান্দায় বারান্দা থেকে আবার অনেক ভেতরে ওরা হেঁটে বেড়ায়। ঘুম যায় না! গভীর অন্ধকার ডিম লাইটের অস্পষ্টতার সাথে মিলেমিশে ঘন এক আবেগের জন্ম দেয় এলোমেলো বুকের ওপর গরম নিশ্বাস পড়ে তারপর একসময় কথা শেষ হয় নড়াচড়া থেমে যায়…

  • দুধভাত

    ভাবছি কোথায় আছি কানের কাছে হাওয়ার ফিসফিস খিদে পেলে দুধভাত খেতে বলছে কেউ দুধ কি সহজলভ্য, আর ভাত জোটে কি সহজে? চুরি হওয়ার পর মাছগুলো উড়ে গেছে দূরে কোথাও ভাবছি কোথায় আছি দেখছি মেঘের সাজ কেউ একজন বলছে ফুলের কথা অথচ লতা দেখে পাচ্ছি ভয়, যেন সরীসৃপ! কী নিয়ে লিখবো কবিতা দুধভাত খেতে বলছে কেউ…

  • কবিতাকাশের গুচ্ছ

    ১.  পান্হপাদপ হতে চেয়েছি –      ক্লান্ত বাউলের ছদ্মবেশে যদি আসো তুমি,      একতারা থেকে হয়তো সুর ঝরবে না,       হয়তো কোনো না-শোনা গান কখনো শোনা হবে না,       হয়তো আমাকে চিনতেই পারবে না,        ফিরে যাবে – ফিরেও তাকাবে না;        তবু যদি আসতে। ২.   ধুলোভরা পথ হতে চেয়েছি –       তোমার দুপায়ে জড়িয়ে…

  • এক জীবন

    এক জীবন যাপন করার সাহস রাখি; রাত হলে শব্দবান্ধবে ভবনদী পাড়ি দিই; একমুখী কুটিরের রোদ-সোনা মেঝেতে দণ্ডমুণ্ডের কর্তাকে নিয়ে পাশ ফিরে শুই। এক জীবন গুহামুখী আঁধারে চারিধার; বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে, মন ভালো সহবত; বিষম বিস্ময়ে, বিস্মরণে, দিন গুজরানো; মধ্যে মধ্যে সামাজিক, বাকি দিন যাযাবর।