October

  • জানি বৃষ্টি আসবেই

    সারাদিন বৃষ্টি-প্রার্থনায় থাকি একটুকরো মেঘের জন্যই প্রত্যাশা এমনকি রাত্রিও যায় বিষণ্ন রোদনে মাঠজুড়ে ধানকন্যার কষ্টের প্রলাপ মেঘেরা উড়ে উড়ে বনবাসে যায়, চৈত্র কি শাওন কি পৌষের হিম কোথাও বৃষ্টি নেই জনপদে শিশুদের তীক্ষ্ণ বিলাপ মায়েদের শুষ্ক ওলান, তবে এর সবকিছুই ক্ষণিক যেমন রাত্রি দিনের জন্যই নামে যেমন চমৎকার সকাল উপ্ত থাকে শর্বরীর ঘনকৃষ্ণ খামে তেমনি…

  • রেইনি

    বৃষ্টিবাদলার ঢাকা মেঘদূতের মহল্লা পুড়ে যাওয়া মল্লার ভেজা আত্মার এস্রাজ পট্যাটো রোস্টেড না ম্যাশ ভ্যান গঘ জানেন বেশ এই কাদাপানির রাস্তা সানাইয়ে বিষণ্ন বিসমিল্লা ও মেয়ের স্তনের বনাঞ্চল হঠাৎ প্রেম লেগে চঞ্চল হু-হু হাওয়ার সমাধি, আজীবন রোদ মাথায় আমি আজ তোমার মেঘলা মনের মুখোমুখি।

  • একটি প্রার্থনা

    সময়ের টুঁটি চেপে ধরে বলি তোমার আগেই রবে আমার শকট ভীরুতার তরবারি ভেঙে গেছে অশোকের হাতে গগনে তবু শুধু নৈরাজ্যিক মাঠ এখানে দেখবে মঞ্চে দর্শক টিকিট কেটে খেলা তাই তো এবার নয় পাতানো সংবাদ নিয়ে করতালি দেয়া এখন দুপুর নামে ভয়ার্ত তিমিরে মেঘলা চাদরে সব কিঙ্করীরা ঘুমে করোনা নামের এক দৈত্য এসে দরবারে বসে বাজায়…

  • অনেক কিছু দেখার আছে

    আমার অনেক কিছু দেখার আছে ॥ আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকা শিশুর মুখ, পথের অভুক্ত কুকুরের লালায়িত জিহ্বা। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা কিশোরীর লাশ, সঙ্গোপনে প্রেমিকের আর্তনাদ। অবুঝ সন্তানের কোলে মায়ের লাশ, পথে পড়ে থাকা নিহত কিশোর, কুমারীর গর্ভে অবহেলায় বেড়ে ওঠা অভিশপ্ত শিশু আমার আরো অনেক কিছু দেখার আছে ॥ আমার বেঁকে যাওয়া মেরুদণ্ড – আমার বিকল…

  • প্রাচীর

    অট্টালিকা নয়, আটপৌরে টিনের চাল আঁতুর দেয়ালগুলি পলেস্তারাহীন অশঙ্ক প্রাচীর চারধারে পাহারায় তরল শৈশবের বিবক্ষু কোলাহল গৃহের অলিন্দে অলিন্দে নিষুপ্ত। যাপিত জীবনের প্রান্তভাগে এসে ইচ্ছা হয় একবার চোখে দেখে আসি প্রাচীন প্রাচীরখানা আছে কি আজো রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে ঋজু দণ্ডায়মান কালের স্থবির সাক্ষী দৃষ্টি নির্লেপ। অবশেষে একদিন সেই বাস্তুভিটায় উপস্থিত আমি – বক্ষ কম্পমান আশ্রয়ের লোভে নয়,…

  • শ্রাবণদিনে হারিয়েছে সুন্দরী

    মেঘের গর্জনে কেঁপে উঠি দুর্জয়-ঝড় এলো বুঝি উড়িয়ে নিয়ে যাবে – খেয়ার ডিঙ্গি! বহুরূপী-রূপ বদলায় ক্ষণে ক্ষণে মেঘ উড়ে কালনদী ঝড়ঝঞ্ঝা যেন মাতাল ক্ষ্যাপা হাতি; আকাশ-বাতাস দেহ নাচিয়ে হাসে জন্তুর হাসি নিপোশাকে নেমে আসে চক্ররাশি। রোদফাটা মাটির কণায় গড়ায় প্রেয়সী উর্বশী আলিঙ্গনে মাতে লাভা অগ্নিগিরি; পরাবাস্তব রংধনুর লীন হাসি দেখে হেসে উঠি হেসে ওঠে আঙিনা…

  • সাদত হাসান মান্টো মানব হৃদয়ের ভবিষ্যদ্বক্তা

    সাদত হাসান মান্টো মানব হৃদয়ের ভবিষ্যদ্বক্তা

    ইংরেজি থেকে অনুবাদ : দিলওয়ার হাসান [কৃষণ চন্দর ও সাদত হাসান মান্টো ছিলেন একজন আরেকজনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁরা একসঙ্গে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন ভারতের ‘আকাশবাণী’ রেডিওতে। তারপর দুজন কর্মক্ষেত্রে ভিন্ন পথে হাঁটলেও তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল অটুট। সাদত হাসান মান্টো ১৯১২ সালের ১১ই মে পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানার পাপরউদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন কাশ্মিরী…

  • আতিয়া ইসলামের ‘বয়ান’

    আতিয়া ইসলামের ‘বয়ান’

    এক ষাটের দশকের প্রথমে জন্ম, তারপর আশির দশকে শিল্পকলার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্ত করে যাঁর শিল্পচর্চার শুরু, তাঁকে শিল্পী হিসেবে বেশ বয়োজ্যেষ্ঠই বলতে হয়। আতিয়া ইসলাম এ্যানি সেই বিবেচনায় একক শিল্প-প্রদর্শনী করেছেন কম, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে এ-বছরের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীটি তাঁর তৃতীয় একক। বিরলপ্রজ তিনি নন, নিরলসভাবে চর্চিত তাঁর শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে দেশে-বিদেশে মাঝারি আর বড়মাপের…

  • নিত্যতা নিয়ে ‘নৈমিত্তিক’

    নিত্যতা নিয়ে ‘নৈমিত্তিক’

    শিল্পচর্চার নৈমিত্তিকতাতেই শিল্পী সৃষ্টি করতে পারেন একটি পরিপূর্ণ শিল্পযাত্রা। এই শিল্পযাত্রাই তাঁর শিল্পী পরিচয়কে তুলে ধরে। তাই নৈমিত্তিক যে-চর্চা শিল্পী করেন তা যেন তাঁর গাঁথতে থাকা মালার মুক্তোবিশেষ। লালমাটিয়ায় অবস্থিত শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে সাতজন শিল্পীর চিত্রকর্ম নিয়ে গত ১৯শে আগস্ট থেকে ২রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয়োজিত হয়েছিল যূথবদ্ধ এক চিত্র-প্রদর্শনীর, নাম ‘নৈমিত্তিক’।  শিল্পী তরুণ ঘোষ, অনুকূল চন্দ্র…

  • সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির : মায়া বস্তু বিস্ময় ও নব্য ব্যাকরণ

    সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির : মায়া বস্তু বিস্ময় ও নব্য ব্যাকরণ

    শিল্পী সৈয়দ মুহাম্মদ জাকিরের একক চিত্র-প্রদর্শনী ‘মায়া’ চলেছে গত ২২শে জুলাই থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত রাজধানীর ধানমণ্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে। ব্যতিক্রমী এই প্রদর্শনী নিয়ে বেঙ্গল আর্টস প্রোগ্রাম আয়োজন করে ‘সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির : মায়া বস্তু বিস্ময় ও নব্য ব্যাকরণ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী ও শিল্প-সমালোচক মোস্তফা জামান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা…

  • শামুকখোল

    শামুকখোল

    অঘ্রান শেষে পৌষের কুয়াশার ভোর। বিলের শান্ত গভীর জলের ওপর অলস অজগরের মতো জমাট কুয়াশার চাদরটা কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে আছে এক টুকরো রোদের আশায়। ওদিকে পুব কোণে কপট কুয়াশার আবরণ ভেঙে সূর্য উঁকি দিতে এখনো বেশ কিছুটা সময় বাকি। সেই অপেক্ষায় পুব আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ঘোট পাকানো কুয়াশাটা হালকা হচ্ছে ধীরে ধীরে – যেন…

  • দীঘলার চরের হাহাকার

    দীঘলার চরের হাহাকার

    এম্নে চাইয়া রইছোস ক্যান? দেখতাছি তোমারে। আমারে দেহনের কিছু আছে? হ, আছে। তুমি য্যামনে ধোঁয়া ছাড়ো সোন্দর লাগে। টানবি? না। আরে টাইন্যা দ্যাখ। মনে হইবো সাম্পানে ভাসতেছোস। কী কও? রেজিয়া বেগম মিছা কতা কয় না বুজলি? আসমানের কালা মেঘরে জাদু কইরা এইটার ভেতর ভরছি। না টানলে বুজবি কেমতে কইলজার ভিত্রে মেঘের ধুমা কেমন কইরা ধাক্কা…