সৌভিক রেজা
-
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর : একটি সাধারণ পর্যালোচনা
সৌভিক রেজা অধ্যাপক অশোক সেন মনে করতেন যে, ‘নানা গরমিলে শিক্ষিতজনের আগাপাশতলায় স্ববিরোধের অভাব নেই।’ কথাটি খুবই সত্যি বলে মনে হয়। সেই অশোক সেনই বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘V idyasagar loved his ego responsibly, conceived of it as a social task, and was greedless in its pursuance; such were his bonafides.’ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘দয়ার সাগর’ নামেও…
-
এক কবির কাব্যিক উদ্ভাসন
সৌভিক রেজা কলহবিদ্যুৎ – আলতাফ শাহনেওয়াজ – কবিতাভবন, চট্টগ্রাম – ঢাকা, ২০১৯ – ১৩৪ টাকা তিরিশের অন্যতম প্রধান কবি বিষ্ণু দে মনে করতেন, ‘কাব্যের ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাসের প্রাবল্যের চেয়ে ব্যক্তি-সমাজের নিহিত ভাষাবিনিময়ের আততিই হচ্ছে আধুনিক কবিতার মৌলিক লক্ষণ।’ বলা যায়, অনেকটা এই সূত্র অনুসরণ করেই আলতাফ শাহনেওয়াজের বইয়ের পাঠ শুরু করেছিলাম। আলতাফের কোনো কবিতার বই এর…
-
দূরের যাত্রা
সৌভিক রেজা আম্মা হাসপাতাল থেকে ফিরে এলেন। এখন তাঁর পাশের ঘরে বিশ্রাম। কেউ-কেউ কালেমা পড়ছেন Ñ লা ইলাহা ইলাল্লাহু বারান্দায় দু-চারটে শুকনো বাদামি পাতা, সামান্য ধুলোবালি এদিক-সেদিক মাকড়সার জাল, টবে লাল-হলুদ ফুল। কেউ চাইছেন Ñ একটু পানি, কেউবা একটু ভিড় কমুক চারপাশের মানুষের ছায়া, রোদ-হাওয়া আলো-অন্ধকার শরীরে মেখে এখন আমাদের আম্মার অনেক দূরের পথে যাত্রা
-
শুকনো পাতার ছবি-২৬
সৌভিক রেজা কেউই আর পৌঁছে দেয় না কিছু; নিজে গিয়ে নিজের জিনিসপত্র সব ঘরে নিয়ে আসতে হয়; হাসপাতালের হিমাগারে যিনি শুয়ে আছেন তিনিও অপেক্ষায় থাকেন; কতক্ষণে বৃষ্টি শেষ, কতক্ষণে বাদল দিন আর তার প্রথম কদম ফুল, বারান্দা ভেসে যায় রক্তে। আমাদের দুঃখের নদী থেকে ঢেউগুলো এখন উধাও; দেখতে-দেখতে বর্ষাও শেষ। শীতের ছায়া শরীরে মেখে এক…
-
মনোভুবনের তিন অধ্যায়
সৌভিক রেজা স্মৃতিগদ্য : বন্ধনহীন গ্রন্থি হাসান আজিজুল হক ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ ঢাকা, ২০১৭ ৩০০ টাকা স্মৃতির কথা যখন আমরা বলি বা ভাবি, তার ভেতর আমাদের অতীতটা যেমন থাকে, তেমনি খানিকটা বর্তমানও সেখানে জুড়ে থাকে। সেজন্য তার মধ্যে অতীতের ধূসরতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রাণের একটা স্পন্দন। হাসান আজিজুল হকের স্মৃতিগদ্য : বন্ধনহীন…
-
শুকনো পাতার ছবি-২৮
সৌভিক রেজা তার কাছে কিছু ঋণ রয়ে গ্যালো; যেখানে নদী সেখানেই কুয়াশা; যেখানে ভিড় সেখানেই মলিন আচ্ছাদন; কোনো-একজন খলিফা এসে ঢেকে দেন রাতের আকাশ; আমাদের ঋণগুলো তারায়-তারায় ভেসে যায়। মেঘ হয়ে ওঠে কোমল গান; তার সমাপ্তির রেশ আর শেষ হয় না; তাকিয়ে থাকি পূর্বাচলের দিকে; কান্নাহাসির লুকোনো কথা কেউ যদি জানে তো জানুক
-
বাড়ির পাশের কবি
সৌভিক রেজা শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এক লেখায় শঙ্খ ঘোষ তাঁকে শহর কলকাতার ‘রাখাল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। বলেছিলেন : ‘আধুনিক এই শহরের পথে চলতে গিয়ে সে-মানুষ যেন গেয়ে চলেছে শুধু অন্তহীন কোনো রাখালিয়া গান, হৃদয়পুরের জটিলতায় ভরা।’ কবি আসাদ চৌধুরীকেও আমরা বলতে পারি শহর ঢাকার তেমনি এক রাখাল। আসাদ চৌধুরী বাস করেন শহরে, আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলা…
-
ওপার-এপার
সৌভিক রেজা ময়-মুরুব্বিরা বলতেন বালাই ষাট; সেই ষাটের উলটোদিকে দাঁড়িয়ে তোমার ঝলমলে ডালপালাগুলো দেখি, পাতা আর ছায়াগুলো দেখতে-দেখতে বাইরে যাই। দেখি জারুলের বেগুনিময় ফুলের আলো। বালাই ষাট। মাঝে মাঝে আলো আর বাতাসের কাছ থেকেও দূরে সরে থাকি। এদিক-সেদিক যাই, তোমার ছায়া নিয়ে নিজের ছায়ায় ফিরতে চাই। হেনা, তুমি ষাটের ঘাটে ফুটে-ওঠা আঁধার-আলো-ছায়া