July

  • অলকানন্দার তীরে

    আমার কোনো দুঃখ নেই কতবার বলব কষ্টও নেই আমার সুখগুলো হাওয়ায় ওড়ে অহর্নিশ। হিজল গাছটার কথা মনে পড়লে মন বলে, কেন বড় হলি তুই? আমি তো বিশ্বাস করো বড় হতে চাইনি। শৈশব আমাকে বড় করে দিলো আচমকা – একদিন লাল নানু এসে বললেন, এই নে এখন থেকে সালোয়ার কামিজ ওড়না পরতে হবে – ফ্রক পরা…

  • আবুল হাসনাত  : কালের স্বপ্নজন

    আবুল হাসনাত ছিলেন প্রগতিচিন্তার নিরলস বাহক – কেউ কেউ  বলেন প্রজ্ঞাবানের পাঠরুচির নির্মাতা। কবিদের ভাবনা বলে – স্বরূপের অনুসন্ধান ও মনোগঠনের পরিচ্ছন্ন এক ভাবধারা, আবুল হাসনাত জীবনজিজ্ঞাসার তাগিদে তৎপর ছিলেন। হাসনাত  বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্র প্রসারিত করে, গতি সচল চরিত্র মাধুর্যের নানান ‘উচ্চতা’ নিজস্ব উৎসাহে বিরতিহীনভাবে অব্যাহত  রেখেছিলেন।  সৃষ্টির মানবিক বোধের মর্মবাণী প্রতিফলিত। শিল্প-সাধনায় আবুল হাসনাত স্থির প্রত্যয়ের…

  • একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে

    ঠিকমতো কিছুই হয় না বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় দরোজার মুখে কুলুপ আঁটা হয় না জামার একটা বোতাম সাবানে খাওয়া প্যান্টের ভেতর থেকে শার্টের বিদ্রোহ  জুতোর ফিতে ক্ষুধার্ত বলে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারে না চশমার জানালায় মেয়াদোত্তীর্ণ কাচ দ্বিখণ্ডিত  শ্বাসকষ্টে ঘড়ির কাঁটার নিশ্বাস নিভে আসছে সূর্য স্থির বলে কতদিন প্রিয়জনের সাথে দেখা হয় না  তাই বলে পৃথিবীর…

  • রুবী রায় 

    আপনি আমার গা ঘেঁষে দাঁড়ালে শীত শীত অনুভব করি। আপনার জলপাই রঙের জ্যাকেট, খোলা চুল, চোখে চোখ রেখে দাবি নিয়ে কথা বলা দেখে আমি থতমত খেয়ে যাই। আপনি আমাকে অবাক করেই হাতে ধরিয়ে দেন গরম চায়ের কাপ। তারপর নদী আর নারীর সৌন্দর্য নিয়ে আমার ভাবনা জানতে চান।  আপনি আমার খোঁজ রাখছেন। এ-কথা ভাবলে আমি মোহাচ্ছন্ন…

  • উচাটন

    দু‌র্নিবার বেদনার পাশে রৌদ্র-আক্রান্ত অ‌পেক্ষা  বৃহস্প‌তির দি‌কে মুখ ক‌রে ব‌সে আ‌ছে উচাটন! প্রেম অ‌প্রেমের মগডা‌লে ঝু‌লে আ‌ছে তাবৎ ঐশ্বর্য! য‌দিও আজকাল সবকিছু  অন‌্যরকম গভীর ক্ষত আর মৃত্যুর ম‌তো! আ‌দিগন্ত গমক্ষেত, দলবদ্ধ ভেড়ার কৌতূহল  পেছ‌নে ফে‌লে চ‌লো যাই পৃ‌থিবীর শেষ ল‌গ্নে। যেখা‌নে নিখুঁত বিস্ময় থে‌কে হৃদ‌য়ের ওপর গ‌ড়ি‌য়ে পড়ে মা‌র্বেলঘু‌ড়ি। কা‌লো মে‌ঘের ভেতর দি‌য়ে উ‌ড়ে আ‌সে…

  • স্বপ্নঘর

    চুন-সুরকির পুরনো গাঁথুনির মতো ঝুপঝুপ খসে পড়ল আমার স্বপ্নঘর সেখানে কে হাত রেখেছিল নাকি দিয়েছিল ঝাঁকি থরে থরে সাজানো বাসন্তী ভালোবাসাগুলো চাপা পড়ে গেল থেঁতলে গেল প্রসন্ন মন আর তছনছ হয়ে গেল সঞ্চিত সকল সুখ তাকে ধরতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছি চিরুনি অভিযানে শুধু গোছা গোছা লোম ছাড়া কারো টিকিটিও মেলেনি সর্বনাশের মূলহোতাকে সন্ধান করতে করতে…

  • ক্লাবঘর

    বৃষ্টি এলেই ক্লাবঘরে যাই – হালকা ভেজা, পুরো ভেজা সবাইকে সবাই পাই – কেউ আসে মাথলা মাথায়, কেউ আসে কলাপাতায়, কেউ বা আবার শিকভাঙা ছাতা। শালিক একটা ভিজে জবুথবু, বসেছে কাছেই কাঠের কার্নিশে টানা বারান্দায়। ছাগল ঢুকেছে বাচ্চাসহ এখনো পান চিবোয় – একটু বাদে চৌকাঠ ঘেঁষে বুকে পিঠে তারা শোয়। আছিয়া-আমেনা লুডু নিয়ে বসে যায়…

  • দখল

    অঋব যেখানে যেখানে যেত, আমি এখন যাইবাবা যেখানে যেখানে যেত, আমি ঘুরে আসি সব অনায়াসে ঘুরে আসা যায় শূন্যস্থানপায়ে হাঁটা লাগে না চাইলেই ঘুরে আসা যায় বিষণ্নতা গুলিও বাবা যেসব জমিতে চাষ দিতেনবাবা যেসব জমিতে আঁচড়া ও নিড়ানি দিতেনআমিও তাই তাই করি মনকৃষিতে আমার ছেলে অঋব যেসব অবিশ^াস্য কাজ করতবা দুষ্টুমি করত, এখন আমিও করিএকা…

  • মৃতদের গল্প

    আকাশ যে নীল নয়এ-কথা জেনে গেছে মৃতরাওতারাও ওড়াতো ঘুড়ি এতোকালরংধনু কেটে কেটে ভাসাতো ধীবরকালেকতশত সাতরঙা নাও। নেবুলা গুঞ্জনে আকাশ কি আজ ফালা ফালা?শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে মৃতদের? আকাশ যে নীল নয় এ-কথা জানার পরমৃতরাও পালালো শহর ছেড়েআকাশের গল্প নিয়ে সেই থেকেখেদ নেই কারো আর আকাশবিহীন অন্ধকার রাত পৃথিবীতে নেমে এলেমিল্কিওয়ে ঘুরে ঘুরেএকাকী জোনাকি শুধু জ্বলে আর…

  • মথুরাপুরের সুদর্শনা

    বুধবার প্রেমার বন্ধ থাকে –সেদিন মথুরাপুরের পোলাপানদেরমন খারাপ হয়।বাজারের নরসুন্দর নিশিকান্তশচীনকর্তার গান বাজায়। পোলাপানরা ডাল ভাঙেগৃহস্থের গাছ হতে ফল পেড়ে খায়সন্ধ্যা নামলেই বেনোজলের আশায়গন্তব্য তাদের ইসলামপুর ঘাট। বাজারের আধাপাগল রঘুহাসিখুশি পানদোকানদার সুজনেরও নাকি কষ্ট হয়।বুধ যায় বৃহস্পতি আসে, একই ভাবে শুক্র, শনি!কষ্টরা জড়ো হয় ব্রেনের ঠিক মাঝখানে। আশ্বিন মাসের প্রথম দিন হলুদ সকালবেলানগরকীর্তন দলে তারে…

  • বিরহগাথা

    কবিতার সঙ্গে অনেকদিন কথা বলা হয়নিশোনা হয়নি অনেকদিন তার হৃদয়ের ধুকপুকআজ কাছে গেলে মুখ ঘুরিয়ে নিল কবিতা,অভিমানে বসে রইল নিশ্চুপ অপরাধী আমি অনর্গল কথা বলে চললামমান ভাঙাতে কথা গেঁথে গেঁথে পরিয়ে দিলাম শব্দের মালাসাময়িক বিরতি বিরহের জন্ম দিলে গাঢ় হয় প্রেম,বারবার বোঝালাম সে-কথা কবিতা হাসল না কবিতা কাঁদল নাছিঁড়ে ফেলতে উদ্যত হলো শব্দের মালাআমি দাড়ি,…

  • দর্পচূর্ণ

    অবান্ধব দর্পে কেবলই একাকিত্বের ব্যাধি,বিরান শীত-তাপে মর্মপীড়ারা ফিরে পায় খাস জায়গা।ইথারের মাঝে মেঘের ঘনঘটালিখে ফেলে যত দেনা-পাওনার লহরি জানতাম, একদিন তুমিও একা হবে!অর্ঘ্য সাজিয়ে ডাকবে ঈশ্বরকে,নীড়হারা বিহঙ্গের মতোঅঝোর নয়নে কাঁদবে।সেদিন এক ফোঁটা জলও হয়ে উঠবে রুপার দানা!দম্ভের আশকারায় কিছুই হারানোর থাকবে না –ঈর্ষার নথিপত্রে নিয়মের অনিয়ম ভেঙেই দ্যাখো একবার।