স্মৃতি

  • চৈত্রপালা

    চৈত্রপালা

    জন্মের ঠিকুজি জানার সবচেয়ে প্রাথমিক উৎস মা। বাবা নন। মা জন্ম দিয়েছেন। বাবা পাশে থাকতেও পারেন, না-ও পারেন। থাকলে দিনক্ষণ বলতে পারবেন। নচেৎ শোনা কথা। বা নোটবুকে টুকে রাখা। কোনো মানুষই তার জন্মক্ষণ সম্বন্ধে বলতে পারে না। কারণ তার স্মৃতিকাণ্ড শুরু হয় ধীরে। এবং কয়েক বছর কেটে যায়। আমার সূত্র মা। তাই দ্বিধার কোনো বালাই…

  • ছেলেবেলার কথা

    ছেলেবেলার কথা

    অধ্যাপক অমিয় দেব তুলনামূলক সাহিত্যের যশস্বী শিক্ষক। দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন যাদবপুর বিশ^বিদ্যালয়ের তুলনামূলক ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে। তাঁর হার্দ্য, অনুভববেদ্য বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সাহিত্য সমালোচনার নৈর্ব্যক্তিক ঘরানার গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, যা বিশ্লেষণের পাশাপাশি নিরন্তর পাঠকের সাহিত্যপাঠের পদ্ধতিকে প্রশ্নে তাড়িত করে এবং সাহিত্যের সঙ্গেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদানকে সম্পৃক্ত করে নেয়। বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্তকে নিয়ে তাঁর লেখা…

  • জগৎ জুড়ে প্রাণের মেলা

    জগৎ জুড়ে প্রাণের মেলা

    হাতেখড়ির পালা একবারে তো আর শেষ হয় না। পড়ে থাকে দ্বিতীয় অধ্যায়। সেটি গণিতের জগৎ। আমরা সবাই দুটি মাত্রায় সীমাবদ্ধ। এক, ভাষা – দুই, গণিত। অ আ শেখার পর আসে রাশি শিক্ষার পালা। তো বর্ণপরিচয় শেখার পর শুরু হলো গণিত পাঠ। এক থেকে দশ পর্যন্ত লেখা চলল। এই প্রথম সিঁড়ি ভাঙার পর এগারো থেকে কুড়ি।…

  • তালগাছ

    তালগাছ

    তালজ্ঞান না থাকলে সংগীতজগতে জায়গা পাওয়া মুশকিল। সুর-লয়-তাল সংগীতের কাঠামো। গান-বাজনা পরে। অনেকে জন্মলগ্ন থেকে এগুলো পেয়ে থাকে। এমন ভাগ্যবান না হলে শিখতে হয়। গুরু ধরে। হতে পারে মা-বাবা বা পরিবারের কেউ। তাছাড়া গুরুমশাই। সংগীতেরও আছে হাতেখড়ি। এখানে হাতেখড়ি কণ্ঠ ও যন্ত্রসহযোগে। আর পেছনে থাকে তাল-যন্ত্রটি। যাকে আমরা বাঁয়া-তবলা, মৃদঙ্গ, খঞ্জনি, করতাল, ঢোল ইত্যাদি বলে…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    সাতচল্লিশ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আমাদের ছেলেমেয়েরা ছুটিতে দেশে এলে আমরা সবাই একসঙ্গে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। ১৫-২০ দিন আমরা কলকাতা ছাড়াও আরো কয়েকটি জায়গায় গিয়েছি। এর মধ্যে অজয় রায়ের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিজড়ানো বারানসও ছিল। প্রধানত আমরা বিমানে চলাচল করলেও অজয় রায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর শরীর লম্বা ভ্রমণের ধকল বইতে পারছিল না। ছেলেমেয়েদের তিনি…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    চুয়াল্লিশ বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে। নতুন নতুন জায়গায় বেড়াতে আমার কোনো ক্লান্তি লাগে না। আমার রেবা মামি বলতেন, ‘জয়ন্তীর পায়ের নিচে সরিষা দেওয়া আছে। ও স্থির থাকতে পারে না।’ কথাটা মিথ্যা নয়। ঘুরতে আমার মজা লাগে। নতুন জায়গা যেমন আমাকে টানে, তেমনি নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতেও আমার ভালো লাগে। তাই বেড়ানোর কোনো…

  • হাতেখড়ি

    হাতেখড়ি

    সবকিছুর একটা শুরু আছে। যেমন তার সঙ্গে শেষও। একমাত্র সময় কোথায় গিয়ে সমাপ্ত হবে কেউ বলতে পারে না। আমরা যেমন মহাশূন্যে হাঁটছি, তেমনি হাঁটছি সময়ের হাত ধরে। হাঁটি হাঁটি পা পা … শুরু হয় মা-বাবার হাত পাকড়াও করে। দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। এটা একটা খেলার মতো। তবে হারজিত নেই। তেমনি লেখাপড়ার শুরুতে অক্ষর চেনা ও…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    প্রায় ৪০ বছরের কর্মজীবনে জীবন বীমা করপোরেশনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কাজ করার এবং পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। প্রায় সবার কাছ থেকেই আমি সহযোগিতা পেয়েছি। সব মানুষ একরকম হয় না। সবার মনের উদারতাও একরকম হয় না। একজন নারী হয়েও কর্মক্ষেত্রে আমাকে কোনো ধরনের হয়রানি বা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি – এটা সিনিয়র-জুনিয়র সব সহকর্মীর মন-মানসিকতার…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    পঁয়ত্রিশ আমরা বন্ধুরা মিলে যে শুধু বাংলাদেশ ঘুরেছি তা নয়। আমাদের বন্ধুত্বের ২৫ বছরে আমরা ভারত, নেপাল, ভুটান ছাড়াও মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড গিয়েছি। একবার নার্গিস এবং তার স্বামী নুরুল ইসলাম মোল্লা দিল্লি যাওয়ার সময় আমাকে এবং জরিফাকেও তাদের ভ্রমণসঙ্গী করে। দিল্লি থেকে আমরা হায়দারাবাদ এবং ব্যাঙ্গালোরও গিয়েছি। মুসি নদীর তীরে অবস্থিত হায়দারাবাদ শহরটি নানা কারণে…

  • শঙ্খ ঘোষ : অন্তরস্থিত সত্তা ও কবিতার অভিব্যঞ্জনা

    শঙ্খ ঘোষ : অন্তরস্থিত সত্তা ও কবিতার অভিব্যঞ্জনা

    কবি শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে আমার তিন-চারবার দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে অল্প। তাঁর কবিতা পাঠ শুনেছি কাছে থেকে, কলকাতার এক অনুষ্ঠানে, আমার কবিতাও তিনি শুনেছেন – সেই অনুষ্ঠানে। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়া বা কথা বলার আগে থেকেই তাঁর কবিতার সঙ্গে আমার পরিচয়, বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন থেকে – তা দিন দিন আরো গভীর হয়েছে। সেই থেকে তাঁর কবিতার…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    চৌত্রিশ আমার দ্বিতীয় দফায় বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয় ২০০০ সালের দিকে। আমাদের বড় মেয়ে তখন জার্মানিতে চাকরি করে। তখন আর দুই জার্মানি নেই। সমাজতন্ত্রের পতনের পর বার্লিন দেয়াল ভেঙে পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানি তখন এক হয়ে গেছে। জার্মানির পূর্ব অংশ ছিল সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাধীন। পূর্ব জার্মানির রাজধানী ছিল বার্লিন। অন্যদিকে পশ্চিম জার্মানি ছিল পুঁজিবাদী ব্যবস্থায়। পশ্চিমের…

  • রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    রায়পুরা থেকে ময়মনসিংহ

    একত্রিশ শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে বেশ কয়েকটি বছর অজয় রায়ের কেটেছে বারানসিতে। আগেই বলেছি, অজয় রায়ের বাবা ড. প্রমথনাথ রায় ছিলেন বারানসির হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। আন্তর্জাতিক মানের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এশিয়ার বৃহত্তম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অজয় রায়ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তবে পিতামাতার অকালমৃত্যুতে পড়াশোনা শেষ না করেই ছোট ভাইবোনদের নিয়ে তাঁকে দেশে ফিরতে হয়েছিল।…