প্রবন্ধ
-
মুক্তিযুদ্ধ, কচুরিপানা ও জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর ‘নীলফুল’
কচুরিপানা পর্ব KPzwicvbv GK cÖKvi fvmgvb RjR Dw™¢`| Gi Bs‡iwR bvg Water Hyacinth Avi বৈজ্ঞানিক নাম Eichornia crassipes. এটি একটি অবাধ ভাসমান গুল্ম। এর নিচে থাকে এক থোকা লম্বা গুচ্ছমূল। ওপরে খর্বিত কাণ্ডে এক থোকা সবুজ পাতা। পাতার বোঁটা খাটো ও স্পঞ্জি। মঞ্জরি ১৫-২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। আর একটি ১০-১২ সেন্টিমিটার দণ্ডে থাকে একটি হালকা…
-
উনিশ শতকীয় নবজাগৃতি ও প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর
শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীর বঙ্গসমাজ গ্রন্থে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘১৮২৫ হইতে ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিংশতি বর্ষকে বঙ্গের নবযুগের জন্মকাল বলিয়া গণ্য করা যেতে পারে। এই কালের মধ্যে কি রাজনীতি, কি সমাজনীতি, কি শিক্ষাবিভাগ, সকল দিকেই নবযুগের প্রবর্তন হইয়াছিল।’ উনিশ শতকীয় নবযুগ বা নবজাগৃতির উতল হাওয়ার পরশে নতুনভাবে জেগে ওঠে মহানগর কলকাতা, জেগে…
-
মনীষী আবুল হুসেন : জীবনী ও অন্যান্য বিষয়ে কিছু নতুন ভাবনা
১৯৩৮ সালে মনীষী, সমাজ সংস্কারক ও চিন্তক আবুল হুসেনের অকাল প্রয়াণের পর বিগত পঁচাশি বছরে তাঁকে নিয়ে, তাঁর প্রবন্ধভাবনা বিশ্লেষণে, তাঁর চিন্তার দর্শনের খোঁজে বিস্তর লেখা হয়েছে – এমনটা বলা যাবে না। তবে কমবেশি গুণীজন, বিদগ্ধজন লিখেছেন। বাংলা একাডেমিও বিভিন্ন মনীষীর রচনা গ্রন্থমালাতে আবুল হুসেন রচনাবলী-১ম খণ্ড স্থান দিয়েছে। তবে আবুল হুসেনের রচনা কালের গর্ভে…
-
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাদব পণ্ডিত
যাদব পণ্ডিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট চরিত্রগুলির মধ্যে এক পরম বিস্ময়। পুতুল নাচের ইতিকথায় ছোট একটি চরিত্র যাদব। উপন্যাসের মূল ঘটনাস্রোতে তার প্রভাব বেশি নয়। তবু আকাশের ধ্রুবতারার মতো শক্তিতে, মহিমায় চরিত্রটি অনন্য, অবিনশ্বর। পরিসরে সীমিত, দ্বীপসদৃশ হলেও চরিত্রটির আবেদন অসামান্য, এর পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে রহস্য, বিহ্বলতা। পদ্মা নদীর মাঝির হোসেন মিয়ার মতোই যাদবের অপূর্বতা…
-
আমি রপ্ত করেছিলাম ক্যারিবীয় দ্বীপ আর সাগর ঢেউয়ের লুকানো ভাষা
(ডেরেক ওয়ালকট আমার প্রিয় কবিদের একজন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর জীবন ও কবিতা নিয়ে আমি মনে মনে নিজেই নিজেকে ডেরেক ওয়ালকটের স্থানে বসিয়ে লিখেছিলাম এই প্রবন্ধ। মনে হলো আমার মৃত্যু হয়েছে এবং পৃথিবীর মানুষের জন্য আমার কিছু বলার আছে। এই লেখাটি লেখার সময় কবির আত্মা এসে যেন ভর করল আমার আত্মায়। আমি হয়ে গেলেম ডেরেক…
-
সাহিত্যের শত্রু ও মিত্র
অন্য সবকিছুর মতোই সাহিত্যেরও শত্রু আছে, যেমন রয়েছে মিত্র। মিত্রের কথাটাই প্রথমে ধরা যাক। এক কথায় বলতে গেলে সাহিত্যের প্রধান মিত্র হচ্ছে মানুষের মনুষ্যত্ব। সকল শিল্পকলার ব্যাপারেই অবশ্য ঘটনাটি ওই একই; মানুষই শিল্পকলা সৃষ্টি করে, মনুষ্যত্বের তাগিদে এবং নিজের প্রয়োজনে। সাহিত্যও মানুষেরই সৃষ্টি, মানুষের প্রয়োজনে। এবং মানুষের ভেতরকার তাগিদে। শিল্পকলার প্রধান মিত্র মানুষের ওই মানুষ্যত্বই,…
-
সিনেমা-নাটক : নতুন কতটা নতুন
সিনেমা অথবা নাটকের বিষয় উপাদান, নির্মাণশৈলী এবং প্রাসঙ্গিকতার উৎকর্ষ বিচার কিংবা নতুন কতটা নতুন, এ-ধরনের তুল্যমূল্য নির্ধারণ বিষয়টি ভাবতে সহজ। কিন্তু বিচারিক মূল্য জুড়ে দেওয়া মোটেও সহজ নয়। কারণ প্রতিটি শিল্পই প্রকাশের উপমায় স্বতন্ত্র। যা কিছু স্বতন্ত্র, সেটাই নতুন। কতটা নতুন যোগমাত্রার লেভেল দেওয়া কঠিন। তবে সার্বিক বিচারে সিনেমা অথবা নাটকের সংস্কৃতিমূল্য আছে কি না,…
-
পাঠকদের রুচি-নির্মাণ ও মননচর্চায় কালি ও কলম পত্রিকার ভূমিকা
বাংলাদেশের সাহিত্য পত্রিকা নিয়ে, বিশেষ করে গত সত্তর বা পঁচাত্তর বছরে আমাদের দেশে যে উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলি বেরিয়েছে, তা নিয়ে খুব ভালো গবেষণামূলক কাজ আমার চোখে পড়েনি। কিছু প্রবন্ধ লেখা হয়েছে, কিন্তু আমাদের মননের জগৎ যেহেতু খুব দুর্বল তাই এসব বিষয় নিয়ে স্থায়ী মূল্য বহন করে এমন কাজ করার মানুষেরও খুব অভাব। আমাদের রাজনীতি, কৃষ্টি বা…
-
জীবনানন্দের গান
বাসররাতে নবপরিণীতাকে গান গাইতে বলার ‘স্পর্ধা’ জীবনানন্দের মতো একজন আপাতনিরীহ স্বামীর পক্ষে কী করে সম্ভব হলো, সে এক বিস্ময়। কিন্তু তিনি সত্যিই বাসররাতে স্ত্রীকে দিয়ে গান গাইয়েছেন। তাও যেনতেন গান নয়, রবীন্দ্রনাথের ‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’। স্ত্রী লাবণ্য দাশের বয়ানে জানা যাচ্ছে : ফুলশয্যার রাতে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ‘আইসব্রেকিং’ হয়েছিল এভাবে : – আমি শুনেছি…
-
আধুনিকায়ন আর বিশ্বায়নের প্রাপ্তি, নাকি খেসারত : বাঙালির নদী আর গানের সহমরণ
আজন্ম ঢাকা শহরে বেড়ে ওঠা এই আমি শহুরে জনপদের বাইরে নদী-প্রকৃতিকে জানবার চেষ্টা করেছি বইয়ের পাতায়, গানের বাণী আর সুরে। কিন্তু মানসচক্ষুতে তার উপলব্ধি গড়ে ওঠার পাশাপাশি চর্মচক্ষুতে দেখবার সুযোগ না ঘটলে ‘দেখা’ দর্শন হয়ে ওঠে না। স্কুলে যাওয়ারও বহু আগে কবে যে প্রথম ‘পদ্মার ঢেউ রে’ গানটি কিংবদন্তি শিল্পী ফেরদৌসী রহমানের কণ্ঠে শুনেছিলাম মনে…
-
দুই দশকের সাহিত্যযাত্রা
কালি ও কলমের দুই দশক পূর্ণ হলো। যে-কোনো সাহিত্য সাময়িকীর জন্যে এই দীর্ঘ সময়ের টানা প্রকাশনা নিঃসন্দেহে এক মাইলফলক। এখানে একটু স্মরণ করা যায় যে, কালি-কলম নামে একটি সাহিত্যপত্র ছিল অবিভক্ত বাংলায়, প্রকাশিত হতো কলকাতা থেকে, প্রকাশকাল ১৯২৬। শুরুতে সম্পাদক ছিলেন তিনজন – মুরালীধর বসু, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও প্রেমেন্দ্র মিত্র। তবে শেষের দুই কথাসাহিত্যিক একে…
-
হাসনাতভাইয়ের জন্য লেখা হলো পর
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘ঢাকা ক্লাবে’। সন্ধ্যাবেলায় সেখানে অনেক লেখক ও টিভি নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রী একত্রিত হয়েছেন। আবুল হাসনাতও ছিলেন। মানে আমাদের সবার প্রিয় হাসনাতভাই। এক ফাঁকে আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে তিনি বললেন, ‘কালি ও কলম নামে আমরা একটা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আবুল খায়ের লিটুর ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ থেকে পত্রিকাটি বেরোবে। আমাদের সঙ্গে…